ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন বাঁশখালী-সবুজচর

ঈদ মানে আনন্দ আর খুশির এক উৎসব। আর ঈদের ছুটিতে অনেকেই পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাবেন। ভ্রমণ হলো প্রিয়জনের সঙ্গে বিশেষ স্মৃতি তৈরির উপায়। ঈদের লম্বা ছুটিতে সেই ঘুরে বেড়ানোর সুযোগটা কেউই হাতছাড়া করতে চায় না। সময় সুযোগ আর অবস্থা হিসেবে যে কেউ বেছে নিতে পারে তার পছন্দের বেড়ানোর জায়গা। এই ঈদের ছুটিতে বেড়াতে যেতে পারেন চট্টগ্রামের অপরূপ দুই উপজেলা- বাঁশখালী ও সন্দ্বীপ।

বাঁশখালী
বাঁশখালী চট্টগ্রাম জেলার উপকূলবর্তী একটি উপজেলা। উপজেলায় রয়েছে সমুদ্র সৈকত, চা বাগান, অভয়ারণ্য এবং ইকোপার্ক। সহজ করে বলতে গেলে ৩৯২ বর্গকিলোমিটারের বাঁশখালীকে সৃষ্টিকর্তা সাজিয়েছেন যত্ন করে। চা বাগানে অবারিত সবুজের হাতছানি, স্বচ্ছ জলের দীর্ঘ পাহাড়ি হ্রদে অজস্র পাখির বিচরণ, সমুদ্রের বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখার মিশেল অনুভূতি নিতে পারেন শুধু বাঁশখালীতেই। উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত চা বাগানের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে বাধ্য যে কেউ। সমুদ্র সৈকতের জন্য বাঁশখালীর খানখানাবাদ, কদমরসুল, কাথরিয়া, বাহারছড়া, রত্নপুর, সরল, গন্ডামারাসহ ছয়-সাতটি পয়েন্ট রয়েছে। 

এছাড়াও বাঁশখালী ইকোপার্ক একটি পরিপূর্ণ ট্যুর প্যাকেজ। অনেকেই জানেন না, বাংলাদেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতুটি রাঙামাটি নয়, এই ইকোপার্কেই। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১২২ মিটার (৪০০ ফুট)। প্রায় ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে পাহাড়ি হ্রদ মোহনীয় আবেশ ছড়িয়ে দেয় পর্যটকের মনে। বোট রাইডিং, পিকনিক সেট, দ্বিতল রেস্ট হাউস, রিফ্রেশমেন্ট কর্নার, সুউচ্চ অবলোকন টাওয়ার, প্যানোরমিক ভিউ টাওয়ার, মিনি চিড়িয়াখানা, ভাসমান প্ল্যাটফর্ম, সাসপেনশন ব্রিজ, মিনি জল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র- কী নেই এখানে? 

যাতায়াত: ঢাকা থেকে বাসে চট্টগ্রাম। নামতে হবে চট্টগ্রামের একে খান কিংবা অলংকার বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে নতুন ব্রিজ স্ট্যান্ডে আসতে পারেন। নতুন ব্রিজ থেকে বাঁশখালীর বাস আছে। ব্রিজ পার হয়ে লোকাল সিএনজি করেও যেতে পারেন। ব্রিজের অপর পারে গেলে বাঁশখালী যাওয়ার জন্য সিএনজি সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। ভাড়া ১০০/১২০ টাকা। 

সন্দ্বীপ
চারদিকে নদী আর সাগরবেষ্টিত এই দ্বীপটি স্থানীয় জনগণের কাছে ‘সাগর কন্যা দ্বীপ’ নামেই বেশি পরিচিত। মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সৌন্দর্যেও ভরপুর। সন্দ্বীপের রহমতপুরে ইউনিয়নে গেলে সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করবেন। দেখতে পাবেন সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য। 

এখানে আছে ‘গ্রিনল্যান্ড’ নামের একটি স্থান। যার অপর নাম ‘সবুজচর’। এটি সন্দ্বীপের দীর্ঘাপাড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। সবুজ ঘাসের গালিচায় মোড়ানো এই চরটি। যতদূর চোখ যাবে সবুজ আর সবুজের নয়নাভিরাম দৃশ্য মুগ্ধ করবে। এই চরে রয়েছে ম্যানগ্রোভ বন। বনে রয়েছে নানা প্রজাতির পাখি। এখানে ক্যাম্পিং করে রাত্রিযাপন করা যায়। মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে সন্দ্বীপ কমপ্লেক্স থেকে ৩০-৪০ মিনিটে মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায় এই সবুজচরে। 

যাতায়াত: বাংলাদেশের যে কোনো অঞ্চল থেকে সন্দ্বীপ উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নৌপথ। ঢাকা থেকে বাসে উঠে চট্টগ্রামের কুমিরাঘাটে নামতে হবে। এখান থেকে যেতে হবে জাহাজ ও স্পিডবোটে। জাহাজে দ্বীপ পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগে দেড়-দুই ঘণ্টা, স্পিডবোটে দ্বীপ পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগে ২০-২৫ মিনিট। জাহাজে শ্রেণিভেদে বিভিন্ন দামের টিকিট পাবেন। স্পিডবোটের টিকিট জনপ্রতি ২৫০ টাকা করে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //