টিকটকের লাগাম ধরলেন ট্রাম্প

কথা রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, টিকটকের লাগাম ধরছেন তিনি। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, আজ থেকে সামাজিক ভিডিও অ্যাপটির প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু তা কী আদৌ করা সম্ভব? 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, আজ রবিবার ও আগামীকাল সোমবারের মধ্যবর্তী সময়েই যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ স্টোর থেকে গায়েব হয়ে যাবে টিকটক। অ্যাপল, গুগল এবং অন্যান্য অ্যাপ স্টোর পরিচালকদের সে রকমই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ফলে নতুন করে কোনো আগ্রহী ব্যক্তি টিকটক নামাতে পারবেন না, মিলবে না নতুন নিরাপত্তা প্যাচ এবং অন্যান্য আপডেট। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঘোষিত নিষেধাজ্ঞায় এভাবেই অ্যাপটির বিতরণ সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। অ্যাপ স্টোর ও গুগল প্লে স্টোরের দুই কর্ণধার অ্যাপল ও গুগল এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। 

টিকটক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন, এবং প্রশাসনের সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন। আমাদের দশ কোটি মার্কিন ব্যবহারকারীর কমিউনিটি টিকটক ভালোবাসেন, কারণ এটি বিনোদন, মতপ্রকাশ এবং সংযোগের একটি স্থান। আমাদের প্ল্যাটফর্মের নির্মাতাদের ক্যারিয়ারে অর্থ ও পরিবারে খুশি নিয়ে আসার জন্য কাজ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আমরা তাদের গোপনতা এবং সুরক্ষা বিধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

টিকটকের মাধ্যমে ছোট আকারের ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে তা শেয়ার করা যায়। মার্কিন কিশোর বয়সীদের মধ্যে অ্যাপটি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু মার্কিন ব্যবহারকারীদের টিকটক ডাটার গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন কর্তাব্যক্তিরা। তাদের দাবি, চীন চাইলেই মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডাটা দিয়ে দিতে হবে টিকটককে। তবে, এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে টিকটক। প্রতিষ্ঠানটি একাধিকবার বলেছে, তাদের কাছে কোনো ডাটা চায়নি চীন, ভবিষ্যতে চাইলেও তারা দেবে না। মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডাটা চীনের বাইরে সংরক্ষণ করা হয়, বেইজিংয়ের নাগালের বাইরে থাকে বলেও আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু মন গলেনি মার্কিন কর্তাব্যক্তিদের। 

অগাস্টে দুটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে টিকটকের মার্কিন ব্যবসা গুটানোর বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একটি নির্বাহে আদেশে টিকটককে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, এবং অপরটিতে বাইটড্যান্সকে টিকটকের ব্যবসা বিক্রি করতে বলা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরাও টিকটকে চীন সরকারের নাক গলানোর কোনো প্রমাণ দেখতে পাননি। 

পুরো ব্যাপারটিকে সরল সমালোচনা আখ্যা দিয়ে এক জ্যেষ্ঠ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা বলেছেন, তাহলে তর্ক হচ্ছে যে, অনির্ভরযোগ্য একটি অ্যাপকে নিরাপত্তা আপডেট আনার সুযোগ না দিয়ে আমরা নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছি, বিষয়টি আমরা এখনই বিশ্বাস করতে পারছি না। পুরোটাই কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়ছে।

সম্প্রতি টিকটকের মার্কিন ব্যবসা বিক্রি না করার কথা জানিয়েছে বাইটড্যান্স। এর বদলে ওরাকলের সঙ্গে অংশীদারিত্বে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন ওই অংশীদারিত্বের চুক্তিতে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, ওরাকল টিকটকের প্রযুক্তি অংশীদার হবে এবং মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডেটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেবে। 

আজ রবিবার বিকেলের আগে টিকটক এবং ওরাকলের চুক্তি চূড়ান্ত হয়ে গেলে, কী হতে পারে – সে বিষয়ে কিছু জানাতে রাজি হয়নি মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

তবে, নভেম্বরের ১২ তারিখের আগে চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে ফের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে টিকটককে, ওই দফায় কমতে পারে প্রতিষ্ঠানটির কার্যকারিতা। ওই সময়ে ইন্টারনেট কাঠামোগত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হতে পারে, টিকটক কনটেন্টের স্থানান্তর গতি কমাতে। এতে করে ধীরগতির হয়ে যাবে টিকটক, এমনকি বিভ্রাটের কবলেও পড়তে পারে সেবাটি।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : টিকটক

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //