নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৪৯ এএম
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
আবারও অস্থির হয়ে ওঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কোন কোন পণ্যের দাম বেড়েছে, সেটা এখন হিসাব করা বেশ কঠিন। তবে মোটাদাগে বলা যায়, দাম বেড়েছে প্রায় সব পণ্যেরই। শীতের সবজিতে ভরপুর বাজার, তারপরও কমছে না দাম। কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। নির্বাচনের আগে যে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজিতে নেমেছিলো, তা এখন ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি দামে এসব পণ্য কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস চরমে।
আজ শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজারে নিত্যপণ্যের হঠাৎ এমন দাম বৃদ্ধিতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৭ টাকা দরে। যা সপ্তাহ দুয়েক আগে ছিল ৬৬ থেকে ৭০ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে সর্বোচ্চ ৬ টাকা বেড়েছে। বিআর-২৮, পায়জাম চালের কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬২ টাকা।
আটা-ময়দা ও ডালের দাম এক লাফে কেজিতে ১০ টাকা ও তেলের দাম লিটারপ্রতি ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। শুধু এই কয়েকটি পন্য নয়, দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি, মাছ, ব্রয়লার মুরগি, ফার্মের ডিম, আদা-রসুনসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যও।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁপে, মুলা ও শালগম ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজি কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৪০ থেকে আকারভেদে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ভরপুর শীতে বাজারে শিমের দামও চড়া, প্রতি কেজি ৮০ টাকা। আর মাঝারি আকারের একটি লাউয়ের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
এদিকে নির্বাচনের পর থেকে দেশে চালের বাজার উত্তপ্ত। কেজিপ্রতি ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যদিও গত মাসে রেকর্ড পরিমাণে আমন ধান উৎপাদন হয়েছে, তাতে বাজারে সরবরাহেও কোনো টান নেই। তারপরও উৎপাদন এলাকা থেকে রাজধানী সব জায়গায় বেড়েছে চালের দাম।
অন্যদিকে বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও প্রতি ডজনে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা। যা গত মাসে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে ছিল।
এছাড়া মুদি বাজারে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। বেড়েছে মসুর ডালের দামও। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগের থেকে ১০ টাকা বেশি।
এদিকে আটা-ময়দা, চিনি-তেলের দাম বেড়েছে কোনো ঘোষণা ছাড়াই। সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৭৩ টাকা করা হয়েছে, যা ভোটের আগে বিক্রি হয়েছে ১৬৯ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকা করা হয়েছে।
চিনির দামেও একই ধরনের অস্থিরতা। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি বাজারে ১৪৮ টাকা মূল্য থাকলেও বিক্রেতারা সেটা খুলে বিক্রি করছেন ১৫০-১৬০ টাকায়।
বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম কমার কথা। কিন্তু বাজারে এসে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। বাজারে সাংঘাতিকভাবে সিন্ডিকেট কাজ করছে। যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh