আবারো ফিক্সিং বিতর্ক

অনেকটা হঠাৎ করেই যেন টালমাটাল হয়ে উঠল দেশের ক্রিকেট ও ফুটবল অঙ্গন। দেশের প্রধান দুই খেলায় দুটি টুর্নামেন্টে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ এসেছে। তবে ক্রিকেটের চেয়ে ফুটবলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগটা বেশ আলোচিত হচ্ছে। 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে টি-১০ ক্রিকেটের পর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফুটবলে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ উঠেছে। এবার তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত টি-১০ লিগ চলে এসেছে আইসিসির আতশী কাঁচের নিচে। এই লিগকে ঘিরে জমজমাট জুয়ার ব্যবসা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশন (আকসু)। 

শুধু তাই নয়, আইসিসির নজরদারিতে বাংলাদেশের তিনজন ক্রিকেটারও রয়েছেন বলে জানা গেছে। লিগের খেলা শেষে পাঁচজন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে নতুন করে এসিইউর তদন্তের বিষয়টি সবার সামনে চলে আসে। যেখানে তিনজন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের নামও শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে পুনে ডেভিলসে খেলা মনির হোসেনের সাথে টুর্নামেন্ট চলাকালেই কথা বলেছেন এসিইউ কর্মকর্তারা। মারাঠা অ্যারাবিয়ান্সে খেলা সোহাগ গাজী ও মুক্তার আলীর ওপরও এসিইউ নজর রেখেছে বলে দুবাই থেকে টি-১০ লিগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। 

তবে এর মধ্যে আবার সোহাগ গাজী দাবি করেছেন, এসিইউর কোনো কর্মকর্তার সাথে তার কথা হয়নি। আর ফোন বন্ধ থাকায় মুক্তারের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। ২০২১ আবুধাবি টি-১০ ক্রিকেট লিগে খেলেছেন বাংলাদেশের সাত ক্রিকেটার। প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে আফিফ হোসেন ও শেখ মেহেদীকে দলে নিয়েছিল বেঙ্গল টাইগার্স। আফিফ পাঁচটি ম্যাচ খেললেও শেখ মেহেদী ছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। 

এদিকে বিপিএল ফুটবলেও দেখা দিয়েছে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া। এই আসরে পাঁচটি ম্যাচের ওপর সন্দেহ রেখেছেন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) কর্মকর্তারা। তবে সন্দেহের বাইরে রাখা হয়েছে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে! মূলত ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের পাঁচটি ম্যাচকে সন্দেহের মধ্যে রাখা হয়েছে। 

স্পট ফিক্সিং ও অনলাইন বেটিং হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেটি বাংলাদেশে বেআইনি কাজ হিসেবে পরিচিত। বাফুফে যদিও এই ব্যাপারে তদন্ত করছে। সে কারণেই এখনই সব কিছু প্রকাশ করা হচ্ছে না। কীভাবে বেটিং হয়েছে বিষয়টি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে জানা যাবে। 

আর অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর শাস্তি দেয়ার দৃষ্টান্তও রয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলে। এবার বিষয়টি একেবারেই নতুন। তাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে পাতানো ম্যাচ শনাক্তকরণের। জানা গেছে, এএফসি অনলাইন বেটিং শনাক্ত করতে সহযোগিতা করবে বাফুফেকে। প্রয়োজনে বাফুফেও সহযোগিতা নেবে। এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে বাফুফে। আরো কিছু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে প্রেরণ করা হবে। এরপর এএফসির কিছু গাইডলাইন মেনে শনাক্তের চেষ্টা করা হবে। এএফসির গাইডলাইন ও সহযোগিতা নিয়েই বাফুফে অনলাইন বেটিং শনাক্তের কাজ করবে। 

বিপিএল ফুটবলে ম্যাচ পাতানো হচ্ছে এমন অভিযোগ করে এএফসি চিঠি দিয়েছিল বাফুফেকে। আরামবাগের যে তিনটি ম্যাচ নিয়ে এএফসি সন্দেহ প্রকাশ করেছে, সেগুলোতে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল- ঢাকা আবাহনী লিমিটেড, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আর সন্দেহের তালিকায় থাকা ব্রাদার্সের ম্যাচ দুটি ছিল বসুন্ধরা কিংস ও ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে। 

বাফুফে এ ব্যপারে নিজেদের অবস্থান আরো একবার পরিষ্কার করেছে। আর কেউ যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তিই দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //