মিয়ানমার সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে গুতেরেসের আহ্বান

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

তিনি বলেন, নির্বাচনের ফল উল্টে দেয়াটা অগ্রহণযোগ্য ও সেনা অভ্যুত্থানের নেতাদের বোঝাতে হবে যে- একটি দেশকে শাসন করার এটা কোনো পদ্ধতি নয়।

গতকাল বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটন পোস্টের সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। 

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সম্ভাব্য একটি বিবৃতির বিষয়ে আলোচনা করছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা করা হয় এমন যেকোনো বিবৃতি আটকে দেবে চীন।

মিয়ারমারের সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর নির্বাচিত নেতা অং সান সুচিকে গ্রেফতার করা হয়। মিয়ানমারের পুলিশ পরে সুচির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি রিমান্ডে রয়েছেন। এছাড়া আটক হওয়ার পর থেকে সুচি কিংবা পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে সেনা অভ্যুত্থানের নেতা ও সেনাপ্রধান মিন অং লাইং ১১ সদস্যের জান্তা গঠন করেছেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মহাসচিব মিয়ানমারে সাংবিধানিক নীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি আশা করছেন, নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে একটি মতৈক্য হবে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সব সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী করার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই করবো আমরা। যাতে করে মিয়ানমারের উপর পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োগ করে এই অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করা যায়। নির্বাচনের ফল ও জনগণের ইচ্ছা উল্টে দেয়াটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।

তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে বোঝানো সম্ভব হবে যে, এটি একটি দেশকে শাসন করার কোনো পদ্ধতি হতে পারে না ও এভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

পশ্চিমা দেশগুলো এরইমধ্যে সেনা অভ্যুত্থানের কড়া নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু চীনের বিরোধিতার কারণে নিরাপত্তা পরিষদে এনিয়ে কোনো একক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে চীন একটি যার ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে।

বরাবরই আন্তর্জাতিক রোষের মুখ থেকে মিয়ানমারকে রক্ষায় ভূমিকা পালন করে আসছে বেজিং এবং সাথে সতর্কও করেছে যে, অভ্যুত্থানের কারণে দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা বা আন্তর্জাতিক চাপ পরিস্থিতিকে শুধু আরো খারাপের দিকেই নিয়ে যাবে।

মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতনের ঘটনায় নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার পাশাপাশি চীনও মিয়ানমারকে সমালোচনার হাত থেকে রক্ষা করেছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্লক করার জন্য সামরিক বাহিনী টেলিফোন কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে। সামরিক সরকার দেশটিতে ফেসবুক বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কারণ তাদের মতে, সামাজিক যোগাযোগের এই প্ল্যাটফর্মটি স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারে ফেসবুক সেবা বিঘ্নিত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে ফেসবুক।

সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এর বিরোধী আন্দোলন সমন্বয় করার জন্য আন্দোলনকারীরা ফেসবুকে বেশ কয়েকটি পেইজ খুলেছিল।-বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //