গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে সফটওয়্যার কিনছে ইউজিসি

গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি (প্ল্যাজারিজম) ঠেকাতে অ্যান্টি-প্ল্যাজারিজম সফটওয়্যার ‘টার্নিটিন’ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

রবিবার (৩০ মে) প্ল্যাজারিজম চেকার ওয়েব সার্ভিস ক্রয় সংক্রান্ত এক সভায় (ভার্চুয়াল) এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেখানে গবেষণাপত্রে চৌর্যবৃত্তি মোকাবিলায় দ্রুত টার্নিটিন সফটওয়্যার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় বলা হয়, টার্নিটিন সফটওয়্যারের আইথেনটিক্যাট অংশ গবেষক এবং শিক্ষকদের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি এবং ফিডব্যাক স্টুডিও দিয়ে শিক্ষার্থীদের থিসিস চৌর্যবৃত্তি ধরা যাবে।

এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহের বলেন, প্রাথমিকভাবে ৩০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই সফটওয়্যারের সেবা সরবরাহ করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এর ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এই সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে গবেষণার স্বত্ব সংরক্ষণ ও মৌলিকত্ব নিশ্চিত করা সহজ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার গবেষণা কার্যক্রমের গুণগতমান সংরক্ষণ ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই সফটওয়্যার।

তিনি আরো বলেন, এর লক্ষ্য হচ্ছে গবেষণায় যাতে কোনো ধরনের চৌর্যবৃত্তি না হয়। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি মোটেও কাম্য নয়। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি করে দেশ খুব বেশিদূর এগোতে পারবে না।

প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণাক্ষেত্রে চৌর্যবৃত্তির ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সংক্রান্ত নীতিমালা না থাকায় গবেষণা কার্যক্রমে চৌর্যবৃত্তির বিষয়টি সংজ্ঞায়িত করা যাচ্ছে না। তাই চৌর্যবৃত্তি শনাক্ত করতে একটি নীতিমালা থাকা প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, টার্নিটিন সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য দ্রুত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারের জন্য এ সফটওয়্যারের একটি রোডম্যাপ করা হবে। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির এ সফটওয়্যার ক্রয় সংস্থাপন বেশ ব্যয়বহুল। তাই এর সবোর্চ্চ ব্যবহারের দিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন, ব্যবহারবিধি, ব্যয় নির্ধারণে পৃথক কমিটি গঠন করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বর্তমানে দেশের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব উদ্যোগে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। টার্নিটিন সফটওয়্যারের সর্বশেষ অবস্থা জানতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে চিঠি দেয়া হবে। এর ফলে এই সফটওয়্যার ব্যবহারের একটি চিত্র পাওয়া যাবে।

সভায় যুক্ত ছিলেন- ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী ও ড. জাবেদ আহমেদ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সেকেন্দার আলী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মশিউল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সায়েদুর রহমান, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামিম আল মামুন, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আক্তার হোসেন, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন বিভাগের পরিচালক মো. কামাল হোসেন ও আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //