ইসলামবিদ্বেষ ঠেকাতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস, পক্ষে ভোট বাংলাদেশের

বিশ্বজুড়ে ইসলামোফোবিয়া (ইসলামবিদ্বেষ) মোকাবিলায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই প্রস্তাবে ইসলামবিদ্বেষ ঠেকাতে একজন বিশেষ দূত নিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী, ১৫ মার্চ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে পাকিস্তান প্রস্তাবটি উত্থাপন করে।

বাংলাদেশ ছাড়াও এর পক্ষে ভোটা দেন সৌদি আরব, তুরস্ক, ইরান, কাতার, কুয়েত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীনসহ ১১৫টি দেশ। ভারতসহ ৪৪টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকলেও কোনো দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়নি।

জাতিসংঘের গণমাধ্যম শাখা থেকে প্রচারিত খবরে বলা হয়, ওআইসির পক্ষে পাকিস্তানের আনা প্রস্তাবটি পাস হওয়ার আগে কিছু বক্তব্য সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছিল ইউরোপসহ পাশ্চাত্যের বেশ কয়েকটি দেশ। কিন্তু প্রস্তাবে সংশোধনীর মতামত শেষ পর্যন্ত দু’বার ভোটের বৈতরণী পার হতে পারেনি।

২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জাতিসংঘ-ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসে ইসলামবিদ্বেষ-বিরোধী প্রস্তাবটি পাস হলো। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় এক বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যা করেছিলেন।

এ দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বিভাজন সৃষ্টিকারী বক্তব্য ও ভুলভাবে উপস্থাপনা বিভিন্ন সম্প্রদায়কে কলঙ্কিত করছে। অসহিষ্ণুতা, গৎবাঁধা ধারণা ও পক্ষপাতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বিবৃতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, অনলাইনে হিংসাত্মক বক্তব্য বাস্তব জীবনের সহিংসতাকে উসকে দিচ্ছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে অবশ্যই ঘৃণাপ্রসূত আধেয় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের হয়রানি হাত থেকে সুরক্ষা দিতে হবে।

নেতাদের উদ্দেশে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্যসহ অন্যান্য বাধা মুসলমানদের মানবাধিকার ও মর্যাদা লঙ্ঘন করছে। অবশ্যই সব ধরনের ধর্মান্ধতার মোকাবিলা করতে হবে। তা নির্মূল করতে হবে। নেতাদের অবশ্যই উসকানিমূলক বক্তব্যের নিন্দা করতে হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাসহ বোঝাপড়ার প্রচার করতে হবে। সামাজিক সংহতি গড়ে তুলতে হবে। সবার জন্য শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ভোটদানে বিরত থাকা জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ তার ভোটের পক্ষ নিয়ে বলেন, একটি ধর্মের বিরুদ্ধে বৈষম্যকে আলাদা করে স্বীকৃতির পরিবর্তে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈনসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যেরও স্বীকৃতি দেওয়াটা জরুরি।

আনাদোলু অ্যাজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, এর আগে গত জুলাই মাসে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। একই মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়, যেখানে বলা হয় পবিত্র গ্রন্থের বিরুদ্ধে সব সহিংসতা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। একই সঙ্গে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায় বৈশ্বিক সংস্থাটি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //