যে ১০ গুনাহ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন মহানবী (সা.)

মানুষের প্রতি হিংসা ও আল্লাহর হুকুম অমান্য করার কারণে অভিশপ্ত হয়েছে শয়তান। এক সময় যে আল্লাহ তায়ালার কাছের একজন ছিলো, এখন সে মানুষকে আল্লাহর কাছ থেকে দূর সরানোর সব ফন্দি আঁটে। মানুষকে গুনাহ ও পাপে লিপ্ত করতে পারলেই সে নিজেকে সফল মনে করে।

বিখ্যাত সাহাবি হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দশটি বিষয়ে ওয়াসিয়্যাত বা উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন-

১. আল্লাহর সাথে কাউকে শারীক করবে না, যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় অথবা আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

২. পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না, যদি মাতা-পিতা তোমাকে তোমার পরিবার-পরিজন বা ধন সম্পদ ছেড়ে দেয়ার হুকুমও দেয়।

৩. ইচ্ছাকৃতভাবে কথনও কোন ফরজ নামাজ ছেড়ে দিও না। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ নামাজ পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তায়ালা তার থেকে দায়িত্ব উঠিয়ে নেন। 

৪. মদ পান থেকে বিরত থাকবে। কেননা তা সকল অশ্লীলতার মূল। 

৫. সাবধান! আল্লাহর নাফরমানী ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকো, কেননা নাফরমানী কারণে আল্লাহর ক্রোধ অবধারিত হয়ে যায়। 

৬. জিহাদ থেকে কখনো পালিয়ে যাবে না, যদিও সকল লোক মারা যায়। 

৭. যখন মানুষের মধ্যে মহামারী ছড়িয়ে পড়ে আর তুমি সেখানেই রয়েছ, তখন সেখানে তুমি অবস্থান করবে (পালিয়ে যাবে না।)

৮. শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী নিজের পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করবে (কার্পণ্য করে তাদের কষ্ট দিবে না)। 

৯. পরিবারের লোকদেরকে আদব-কায়দা শিক্ষার জন্য কখনো শাসন থেকে বিরত থাকবে না।

১০. আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করতে থাকবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস, ২১৫৭০, সহিহ তারগীব, হাদিস, ২৩৯৪)

হাদিসটি বর্ণনাকারী সাহাবি মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন বিশিষ্ট সাহাবী। তিনি হাদিস বর্ণনা ও ইসলামের অন্যান্য শাখায় কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন একজন আনসারী সাহাবি। তিনি বদর যুদ্ধসহ গুরুত্বপূর্ণ সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। 

তিনি মদিনার বিখ্যাত খাযরাজ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. ১৮ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। দ্বিতীয় আকাবায় রাসূল (সা.)-এর হাতে বাইয়াত গ্রহণের মজলিসে তিনি উপস্থিত ছিলেন। 

তিনি সবসময় রাসূল (সা.)-এর স্নেহ ও আদর লাভে ধন্য হয়েছেন। মক্কা বিজয়ের পর রাসূল সা. তাকে ইয়েমেনের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। হজরত আবু বকর এবং ওমর (রা.)-এর শাসনামালেও ইসলামের নিরলস সেবক হিসেবে কাজ করে যান।

তিনি রাসূল (সা.)- এর কাছ থেকে সর্বমোট ১৫৭টি হাদিস বর্ণনা করেন। 

মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ১৮ হিজরীতে ৩৮ বছর বয়সে হজরত ওমর রা-এর শাসনামালে প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে বায়তুল মাকদাস ও দামেশক-এর মধ্যবর্তী এবং জর্দান নদীর তীরবর্তী ‘বীসান‘ নামক স্থানে ইন্তেকাল করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //