চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩০ পিএম
নিহত তাহমিনা আক্তার ও তার দেড় বছর বয়সী সন্তান। ছবি: চাঁদপুর প্রতিনিধি
দেড় বছর বয়সী শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক মা। আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের হাজীগঞ্জ কাজীগাঁও এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই গৃহবধূর নাম তাহমিনা আক্তার (২৪)। তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে। তার মুনতাহা (৫) নামে কন্যা সন্তানও আছে। ২০১৯ সালে একই উপজেলার সন্না গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে মো. মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের সাথে পারিবারিকভাবে তাহমিনার বিয়ে হয়।
আত্মহত্যার ঘটনার পর হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এরপর বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানা পুলিশ।
চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদু রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সুরাতহাল তৈরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাহমিনা আজকে তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এর আগে তাহমিনা গত ২৮ মার্চ তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর স্বামী দেশে আসলেও কোনো সুরাহা না পাওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন বলে স্থানীয়দের ধারণা।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তাহমিনা আক্তার বিয়ের পর থেকেই তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। বিয়ের পরে বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ধার নিয়ে স্বামীকে কুয়েত পাঠান। স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় তাহমিনার সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মোবাইল ফোনে বাকবিতণ্ডা হয়। তার স্বামী তাকে বাবার বাড়ি থেকে অন্যত্র থাকতে বলেন। যে কারণে তিনি হাজীগঞ্জ মকিবাদ চৌধুরী পাড়ায় দুই সন্তানকে নিয়ে বাসা বাড়া করে থাকতেন। এরপর তার স্বামী নানা অপবাদ দিয়ে তাকে তালাক দেন।
এদিকে গত ১৮ এপ্রিল তাহমিনার স্বামী মাসুদুজ্জামান দেশে আসেন। তবে দেশে এসে বিষয়টি সুরাহা না করে আবার প্রবাসে চলে যাওয়ায় আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেয় তাহমিনা- এমনটা ধারণা করছেন স্বজনরা।
তাহমিনা আক্তার হাজীগঞ্জ থানায় গত ২৮ মার্চ অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমানকে।
এসআই আব্দুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি সুরাহার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ অভিযুক্ত মাসুদুজ্জামান পরিবারের সাথে বসার চেষ্টার করা হয়। কিন্তু তারা রাজি হননি। এরপর গত এক সপ্তাহ আগে মাসুদ্দুজামান দেশে আসেন। কিন্তু তিনি বাড়িতে না এসে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকেন। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে কোন সুরাহা করা সম্ভব হয়নি। জানতে পারি তিনি আবার প্রবাসে চলে গেছেন।