নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২০ পিএম
লুৎফুল হাবিব রুবেল। ছবি: সংগৃহীত
নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রতিমন্ত্রী রাজশাহী থেকে লুৎফুল হাবিব রুবেলকে ফোন করে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরও জানান, আজ রাতের মধ্যে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশসহ একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ লুৎফুল হাবিব রুবেলকে পাঠানো হবে। এছাড়া আগামীকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার পর রুবেলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ সংক্রান্ত লিখিত নোটিশ রুবেলকে দেয়া হবে। রুবেল দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হবে।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১৫ এপ্রিল জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশার মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা, মারপিট ও অপহরণের ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি সুমনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আপনার সম্পৃক্ততার কথা জানা গেছে, যা দলীয় আচরণবিধি পরিপন্থীর শামিল। এ অবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা আগামী তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে শুক্রবার সকালে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন দেলোয়ার হোসেনকে দেখতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তিনি অসুস্থ দেলোয়ার হোসেন ও তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসকের কাছে তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনার জন্য তিনি লজ্জিত ও ক্ষমা প্রার্থী। কে আমার ভাই, কে আমার শ্বশুর কিংবা শ্যালক এটা কোনো বিবেচনার বিষয় নয়। এটা নিয়ে আমি বিব্রত, লজ্জিত, দুঃখিত ও ক্ষমা প্রার্থী। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সুষ্ঠু বিচার হবে। কেউ ছাড় পাবে না।
উল্লেখ্য, এর আগে সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে নাটোর জেলা নির্বাচন ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেলের সমর্থকরা অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে মারপিট করে বাড়ির পাশে ফেলে দিয়ে যায় তারা। পরে দেলোয়ার হোসেনকে গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির দিকে।
এ ঘটনায় দেলোয়ার হোসেন পাশার ভাই মজিবর রহমান বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ দুই জনকে গ্রেপ্তার করার পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হামলার ঘটনার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের নাম গণমাধ্যমে উঠে আসে। এছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ করে মারধরের অভিযোগ ওঠায় এরই মধ্যে লুৎফুল হাবিব রুবেলকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।