ইউটিউব কেন বাংলাদেশের ভিডিও মুছল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৯ পিএম

ইউটিউব। ছবি- সংগৃহীত

ইউটিউব। ছবি- সংগৃহীত

নিজেদের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রায় দেড় লাখ ভিডিও মুছে ফেলেছে ইউটিউব। আর এই তিন মাসে বিশ্বে প্রায় ৯০ লাখের বেশি ভিডিও মুছে ফেলেছে ভিডিও বিনিময়ের সাইটটি। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবহারকারীদের প্রায় ১০ কোটি মতামতও মুছে ফেলেছে। কিন্তু এত বিশাল সংখ্যক ভিডিও কেন মুছে ফেলল ইউটিউব? কী রয়েছে তাদের অভিন্ন নীতিমালায়? সেসব তথ্য উঠে এসেছে ডিসমিসল্যাবের এক প্রতিবেদনে।

সেখানে বলা হয়েছে- উগ্রপন্থা, নগ্নতা এবং স্প্যাম ভিডিও প্রচার এবং শিশুবান্ধব না হওয়ায় এসব ভিডিও ও মতামত মুছে ফেলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সবথেকে বেশি ভিডিও মুছে ফেলা হয় ভারতের। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। এছাড়া এই সময়ে ইউটিউব থেকে ২০ কোটির বেশি ইউটিউব চ্যানেল মুছে ফেলা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যেসব কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘনের জন্য ভিডিও সরানো হয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল ক্ষতিকর বা বিপজ্জনক কনটেন্ট– যার হার ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ। সহিংসতা ছড়ানো বা তাৎক্ষণিক ক্ষতির ঝুঁকি থাকায় কনটেন্টগুলো অপসারণ করা হয়। এরপরই সবচেয়ে বেশি সরানো হয়েছে শিশুদের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে এমন ভিডিও। এর হার ছিল ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ। শিশুদের হয়রানি ও তাদের কেন্দ্র করে নানা অনলাইন অপব্যবহার রোধে ভিডিওগুলো সরানো হয়। তৃতীয় যে শ্রেণির ভিডিও সরানো হয়েছে সবচেয়ে বেশি সেগুলো ছিল হিংসাত্মক বা গ্রাফিক কনটেন্ট। এর হার ছিল সাড়ে সাত শতাংশ। মানুষের মনে আতঙ্ক বা উদ্বেগ ছড়াতে পারে এমন সংবেদনশীল দৃশ্য যেমন দাঙ্গা, রক্তপাত ইত্যাদিকে হিংসাত্মক বা গ্রাফিক কনটেন্ট হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে ইউটিউব।

ইউটিউব ব্যক্তিমানুষ ও মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এই দুইয়ের প্রয়োগ ঘটিয়ে নীতিমালা লঙ্ঘনের বিষয়গুলো যাচাই করে। তবে মুছে ফেলা এসব ভিডিওর ৯৬ শতাংশের ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এআই। বাকি ৪ শতাংশ ভিডিও অপসারণে ইউটিউবের সাধারণ ব্যবহারকারী ও ‘প্রায়োরিটি ফ্ল্যাগার প্রোগ্রামের’ সদস্যদের অভিযোগ বা পরামর্শ বিবেচনা করা হয়েছে।

ইউটিউবের কমিউনিটি নীতিমালা লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণে কাজ করে ইউটিউবের প্রায়োরিটি ফ্ল্যাগার প্রোগ্রাম- যাতে বেসরকারি ও সরকারি দুই ধরনের অংশীদারগণই যুক্ত রয়েছেন।

ইউটিউব জানিয়েছে, বছরের শেষ প্রান্তিকে অপসারিত ভিডিওর ৫৩ শতাংশই সরিয়ে ফেলা হয় কোনো ব্যবহারকারী দেখার আগেই। ২৭ শতাংশ ভিডিও মাত্র এক থেকে ১০টি ভিউ পায়।

কমিউনিটি গাইডলাইন না মানার কারণে ভিডিও অপসারণের পাশাপাশি ১১০ কোটির মতো মন্তব্যও অপসারণ করেছে ইউটিউব। এর প্রায় ৯৯ শতাংশ মন্তব্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্প্যাম হিসেবে চিহ্নিত হয় এবং মুছে যায়।

বছরের শেষ তিন মাসে অপসারিত ৯০ লাখ ভিডিও-র মধ্যে সর্বোচ্চ সাড়ে ২২ লাখ ভিডিও ভারত থেকে সরানো হয়। ভিডিও অপসারণ বিচারে ভারতের পর সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্র- যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সিঙ্গাপুরের ১২.৪ লাখ ও যুক্তরাষ্ট্রের সাত লাখ ৮০ হাজার ভিডিও সরানো হয়। সাত লাখ ৭০ হাজারের বেশি ভিডিও অপসারণ হওয়ায় ইন্দোনেশিয়া রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh