বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:১১ পিএম

পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে। কিন্তু গত বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে নেতা-কর্মীদের একটি বহর বুয়েট ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করে। এ ঘটনাকে ন্যক্কারজনক আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে মধ্যরাতে বুয়েটে বহিরাগতদের প্রবেশের প্রতিবাদে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনের পর মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তারা ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা এই বুয়েটে হবে না’, ‘বুয়েট থেকে করব ছাড়া, পলিটিকসে যুক্ত যারা’, এমন বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে বুধবার (২৮ মার্চ) মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হলের (আসন) বাতিল; ওই ঘটনায় ইমতিয়াজ রাব্বির সঙ্গে বুয়েটের বাকি যেসব শিক্ষার্থী জড়িত ছিলেন, তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম বহিষ্কার; যেসব বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না ও তারা কেন কীভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেলেন, সে ব্যাপারে বুয়েট প্রশাসনের সুস্পষ্ট সদুত্তর ও জবাবদিহি; প্রথম দুটি দাবি দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন না হলে ডিএসডব্লিউর পদত্যাগ এবং আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া৷

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২৮ মার্চ রাত একটার দিকে বুয়েটে একটি বিশেষ রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের বেশ কজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়েই ভেতরে ঢুকেছেন। অথচ রাত সাড়ে ১০টার পর নিরাপত্তাজনিত কারণে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি নেই, সেখানে রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট বহিরাগত ব্যক্তিদের মধ্যরাতেই বুয়েট ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশ ঘটে। শুধু তারাই নয়, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক বহিরাগত রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে আসতে থাকে। রাত দুইটার পর মিছিলের মতো করে বিশাল একটি বহর ফুলের তোড়া নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। সেই জনবহরের সবাই বহিরাগত ছিল এবং তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল।

এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ, এমন একটি ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে এত বড় একটি রাজনৈতিক সমাগম এবং বহিরাগতদের আগমন ক্যাম্পাসের মর্যাদার প্রতি তীব্র অপমানজনক। একই সঙ্গে এটি একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু স্বাভাবিক শিক্ষাপরিবেশের নিরাপত্তার ব্যাপারকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর কোনোভাবেই এই দায় এড়িয়ে যেতে পারে না৷

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh