টেকনাফে অপহরণ চক্রের ২ জন গ্রেপ্তার

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:১২ পিএম

অপহরণ চক্রের গ্রেপ্তারকৃত দুই সদস্য। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

অপহরণ চক্রের গ্রেপ্তারকৃত দুই সদস্য। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফে এক সপ্তাহে ১৫ জন অপহরণকারী চক্রকে শনাক্ত করতে পেরেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, অপহরণকারী সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান মোর্শেদ ও হেলালকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে এই অপহরণের ঘটনায় পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক হবে। ফলে পুলিশ মোর্শেদ ও হেলালকে গ্রেপ্তারে তৎপর হয়ে  উঠেছে।

গত বুধবার টেকনাফের জাহাজপুরা পাহাড়ে অভিযানে অপহৃত ১০ জনকে উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুইজনের কাছে প্রাপ্ত চাঞ্চল্যকর তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ বাহিনীর প্রধান দুইজনকে গ্রেপ্তারে তৎপরতা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি।

তিনি জানান, গত ২১ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত টেকনাফের হ্নীলা, হোয়াইক্যং ইউনিয়ন থেকে ১৫ জনকে অপহরণের পুরো ঘটনায় জড়িত এই মোর্শেদ-হেলাল বাহিনী। বুধবার মধ্যরাতে জাহাজপুরা পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অপহৃত যে ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের দেওয়া তথ্য এবং প্রাপ্ত জড়িতদের নাম ঠিকানা নিয়ে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এর জের ধরে বুধবার ভোরে পৃথক অভিযানে ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুইজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত দুইজন হলেন, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং এলাকার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে মো. নবী সুলতান নবীন (৩৫) ও বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শিলখালী এলাকার মৃত হোছনের ছেলে মো. ছলিম (২৬)।

অভিযানে ১টি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান (এলজি) এবং নানা আকারের বড় ৮টি দা উদ্ধার করা হয়েছে।

এর মধ্যে নবী সুলতানকে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যংস্থ ২২নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উত্তর পাশে পাহাড় থেকে এবং ছলিমকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ছলিম চিহ্নিত একজন ডাকাত এবং ডাকাতি মামলায় গত ৩ মাস আগে জমিনে কারাগার থেকে বের হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি জানান, বুধবার ১০ জনকে উদ্ধারের ঘটনায় অপহৃত একজনের পিতা বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করেছেন। একই সঙ্গে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ অস্ত্র আইনে আরো একটি মামলা করেছে। সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার দুইজনকে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাদের কাছ থেকে আরো তথ্য পাওয়া যাবে।

তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুইজন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছে জানিয়ে ওসি বলেন, গত ২১ মার্চ হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে পাঁচজন, ২৬ মার্চর হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে দুইজন এবং বুধবার (২৭ মার্চ) বিভিন্ন সময় হোয়াইক্যং এর বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে ৮ জনকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার দুইজন।

গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য বলছে, অপহরণের পুরো ঘটনাটি সংঘটিত করেছে বাহারছড়া এলাকার সন্ত্রাসী মোর্শেদ ও হেলাল। তাদের দুইজনের নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাদের নিয়ে একটি বাহিনী ঘটন করেছে। যারা পাহাড়ের গহীনে নানা স্থানে আস্তানা তৈরি করেছে। ২১ মার্চ পাঁচজন অপহরণের ঘটনাটি মুক্তিপণ আদায়ের টার্গেট করেই অপহরণ করা হলেও পরের ১০ জনকে অপহরণ করা হয়েছে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে। এই ১০ জনকে যে পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহরণ করা হয় এটা এসব সন্ত্রাসীদের যাতায়াতের পথ। যাতায়াতকালে প্রতিবন্ধকতা দূর এবং আতঙ্ক তৈরি করতেই এই অপহরণ। একই সঙ্গে পাহাড়ে থাকা খেত দখল করে সন্ত্রাসীরা আস্তানা করতে চায়। ফলে আতঙ্ক তৈরি করে কৃষকরা যেন খেতে না যান তার জন্য এই বাহিনী তৎপরতাও চালাচ্ছে। তবে এই বাহিনী প্রধানসহ জড়িত অনেকের নাম ঠিকানা পাওয়া গেছে। পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে এদের গ্রেপ্তার করতে পারবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh