আরিফুল ইসলাম
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম | আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
ফাইল ছবি।
এক নজরে ৭ মার্চের ভাষণ
তারিখ: ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ, সময় : বিকাল ০২.৪৫ থেকে ০৩.০৩ মিনিট, স্থায়িত্ব : ১৮ মিনিট।
স্থান: রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)
অনুবাদ: মোট ১৩টি ভাষায়।
ভিডিও ধারণ: নির্মাতা আবুল খায়ের।
স্বীকৃতি: ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর, ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’।
এই ভাষণ নিয়ে অনেকে উচ্চতর গবেষণা করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের তথ্যমতে ২০১৫ সালে কানাডার একজন অধ্যাপক সারা বিশ্বের ঐতিহাসিক ভাষণ নিয়ে একটা গ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন, সেখানে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অধ্যাপক বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন মন্তব্য করেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন এমন একজন মহামানব, যিনি কঠিন পরিস্থিতিতে এই ভাষণে ভারসাম্য রক্ষা করেছিলেন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু না বলে জনগণকে শান্ত রাখতে পেরেছিলেন। বিশ্বে আর কোনো রাজনীতিবিদ এটা পেরেছেন বলে আমাদের জানা নেই। এই ভাষণ অনেক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। এটা এখন নিজস্ব গতিতে সবার কাছে পৌঁছে যাবে।’
সাতই মার্চের ভাষণ ঐতিহাসিক। একটি জাতির ইতিহাস বদলে দেওয়ার দলিল। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৮ মিনিটের এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। যে ১৮ মিনিটের ভাষণ দীর্ঘ ২৩ বছরের লড়াই সংগ্রামকে এক চূড়ান্ত ধাপে নিয়ে যায়। এই ভাষণ জাতিকে স্বাধীনতার সশস্ত্র সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করে। জাতি শুরু করে মুক্তির সংগ্রাম। যার যা কিছু ছিল সেটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে সে।
৭ মার্চ তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই ভাষণ বিশ্ব কূটনীতির এক উদাহরণ। কারণ একদিকে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যা দিত। অন্যদিকে স্বাধীনতার পরোক্ষভাবে ঘোষণা না দিলে পুরো জাতি হতাশ হয়ে অপ্রস্তুতভাবে যুদ্ধের সম্মুখীন হতো। সেই সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি তোফায়েল আহমেদ ৭ মার্চ ভাষণ নিয়ে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ওই ভাষণ দিয়েছিলেন। একদিকে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, অন্যদিকে তাকে যেন বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে অভিহিত করা না হয়, সেদিকেও তার সতর্ক দৃষ্টি ছিল। তিনি পাকিস্তান ভাঙার দায়িত্ব নেননি। তার এই সতর্ক কৌশলের কারণেই ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এই জনসভার ওপর হামলা করার প্রস্তুতি নিলেও তা করতে পারেনি।’