চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৫৩ পিএম
পেশাদার মোটরযান চালকদের মানববন্ধন। ছবি: চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
পেশাদার মোটরযান চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্সে ভুল হওয়া জন্মতারিখ সংশোধন ও স্মার্টকার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে সিথিলতার দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন পেশাদার মোটরযান চালকরা।
আজ শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় শহরের শহীদ হাসান চত্বরে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর ও মাগুরা জেলার শতাধিক ভুক্তভোগী মোটরযানচালক এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এম. জেনারুল ইসলাম, রিপন মন্ডল, মামুন অর রশিদ মামুন, সিরাজুল ইসলাম, মিল্টু জোয়ার্দ্দার প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, কয়েক বছর ধরে স্থানীয় বিআরটিএ কার্যালয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের আবেদন ফাইল পড়ে আছে। এসব আবেদনপত্রের কোন সুরাহা হচ্ছে না। ইতিমধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ সংশোধনের দাবি তুলে গত তিনমাসে আরো দুইবার মানববন্ধন করা হয়। একজন পেশাদার চালক ৪/৫ বার নবায়ন করে স্মার্ট কার্ড পাওয়ার পরও বর্তমানে জন্ম তারিখ ভুলের কারণে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছেন না। ৪৭৭ নং স্মারকে ২০০১ সালে জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য একটি প্রজ্ঞাপন হয়েছিল। ওই প্রজ্ঞাপনের পর জানামতে ২০১৬ সালে জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য আরো একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়। বর্তমান প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভলিউমে সঠিক তথ্য থাকা চালকদের জন্ম তারিখ সংশোধন পূর্বক নবায়নের সুযোগ এবং নন-স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স সিথিলতা করে দ্রুত স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন। এই প্রজ্ঞাপনের আওতায় যেসব ভলিউমে জন্ম তারিখ সংশোধন করা হয়েছে এ সকল নবায়নের লাইসেন্সগুলো পূর্বের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী দ্রুত নবায়নের সুযোগ দিয়ে স্মার্ট কার্ড প্রদান করতে হবে। পূর্বে ২০ বছরের ঊর্ধ্বে পেশাদার ডাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হতো। বর্তমানে ২০২১ সালের দিকে এক প্রজ্ঞাপনে ২১ বছরের ঊর্ধ্বে পেশাদার ডাইভিং লাইসেন্স দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পূর্বে যারা ২০ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে লাইসেন্স পেয়েছেন তারা বর্তমানে নবায়ন করতে এসে ২০২১ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২১ বছরের সীমায় অর্থাৎ দেড় বছরের বয়স সীমায় আটকে যাচ্ছেন।
তারা আরো বলেন, অনেক চালকের শ্রেণি সংযোজন, শ্রেণীপরিবর্তন, নথিভুক্ত কার্যক্রমে কয়েক বৎসরের মধ্যে এখনো পর্যন্ত জটিলতা নিরসন হয়নি। অনেক চালকের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার পরও জন্ম তারিখের জটিলতার কারণে তারা লাইসেন্স পাচ্ছেন না। সারা দেশে বৈধ চালকের সংখ্যা অনুযায়ী গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী চালকদের লাইসেন্সের দুই বছর পূর্তি হলে সকল চালককে হালকা থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে ভারী লাইসেন্স প্রদানের জন্য সুযোগ দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য সারা বাংলাদেশে ৪০/৫০ হাজার পেশাদার-অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল হলে এই সকল চালকদের পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় বসা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। এমতাবস্থায় চালকরা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। তাদের জীবন যাতে বিপন্ন না হয় সেই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী দেখবেন বলে আন্দোলনকারী চালকদের বিশ্বাস।
চালকরা তাদের পূর্বের লাইসেন্স ও নবায়নের স্লিপ নিয়ে ২/৩ বৎসর যাবত রাস্তায় মোটরযান চালাতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তারা স্লিপ এবং পূর্বের লাইসেন্স মানতে রাজি হচ্ছে না। উক্ত চালকগণ বারবার লাঞ্ছিত হচ্ছেন। তাদেরকে গুনছে হচ্ছে মোটা অংকের জরিমানা। চালকদের জরিমানা প্রদান এবং মামলা নিষ্পত্তির জন্য দূরের জেলায় যেতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় আবেদনকারী চালকদের লাইসেন্স বাতিল হলে দেশে অবৈধ চালকের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। তাদের মতে, পাসপোর্ট অফিসে এফিডেভিট করে জন্ম তারিখ সহজেই সংশোধন সুযোগ রয়েছে। কিন্তু যাদের বৈধ রেকর্ড ও ভলিউম আছে তাদের জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে জন্ম তারিখ দ্রুত সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ৪০/৫০ হাজার চালক লাইসেন্সপ্রাপ্ত হবে এবং তাদের পরিবার বেঁচে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে বক্তারা বলেন, পেশাগত দিক বিবেচনা এবং চালকদের পরিবার-পরিজনের মুখের দিকে তাকিয়ে মানবতা ও সহানুভূতির সাথে বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।