নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৫০ পিএম
আমদানি সহজ করতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ছবি- সংগৃহীত
ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, ডিম, আলু ও পেঁয়াজের এলসি খুলতে সমস্যা যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। পাশাপাশি কোল্ডস্টোরেজ গেটে আলুর কেজি ২৭ টাকা এবং খুচরা ৩৬ টাকা মূল্য নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের।
গতকাল (১২ নভেম্বর) রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এবং ডিসিদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার থেকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ২৫-৩০টি ট্রাকে টিসিবি ডাল, তেল, আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি করবে। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীর বাইরে থাকা লোকজন এ পণ্য কিনতে পারবেন।
দ্রব্যমূল্য ও সার্বিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপনকান্তি ঘোষ বলেন, ৩০টি ট্রাক থেকে প্রতিদিন ৯০০ জন এই পণ্য কিনতে পারবেন। প্রতি কর্মদিবসেই পণ্য বিক্রি হবে। আর আগামী দিনে টিসিবি বেশি পরিমাণ পণ্য সংগ্রহ করতে পারলে ট্রাক সেলের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এটি ঢাকাবাসীর জন্য অবশ্য সুখবর। ঢাকার অনেক ভাসমান মানুষ যাদের ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা গ্রামে। এজন্য টিসিবির কার্ডধারী হতে পারেননি অথচ ঢাকায় বাস করছেন। তাদের চিন্তা করেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি ব্যাখ্যা দিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বিশ্বের অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এ কারণে আমরা ব্যাপকভিত্তিক যে পণ্য আমদানি করছি, বিশেষ করে তেল, চিনি ও ডালের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হার বেশি হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সয়াবিন তেলের দাম ২০৫ টাকা লিটার ওঠে। সেখান থেকে ধাপে ধাপে কমিয়ে এখন ১৬৯ টাকায় আনা হয়। লিটারে ৩৬ টাকা কমেছে।
বাজার থেকে বড় কোম্পানিগুলো আইন অমান্য করে মূল্য বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অনুসন্ধান করা হবে কি না প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, বড় কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। ইতোমধ্যে বেশি মূল্য বাড়িয়ে পণ্য বিক্রির অভিযোগে ৬৫টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা চলমান প্রতিযোগিতা কমিশনে। দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও সংকট কাটছে না কেন-প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, সয়াবিনের সংকট নেই, ডিম ও আলুর মূল্য কমে আসছে। পেঁয়াজ নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। আগামী এক মাসে উৎপাদিত পেঁয়াজও আসবে না। আরও এক মাস উচ্চমূল্য থাকতে পারে। তবে কৃষকের পেঁয়াজ বাজারে চলে এলে মূল্য কমবে।
চিনি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্রাজিল ও ভারত থেকে আমদানি করা হয়। এরই মধ্যে ভারত বন্ধ করেছে রপ্তানি। আর ব্রাজিলে সারা বিশ্বের চাহিদা একসঙ্গে পড়েছে। এখন চিনির গড় মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৫৭৫ মার্কিন ডলার, এর সঙ্গে ডলারের উচ্চমূল্য। এসব প্রভাব চিনির ওপর গিয়ে পড়েছে। নতুন আলু না আসা পর্যন্ত আমদানি অব্যাহত থাকবে।