নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৬ পিএম | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৩ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: খুলনা প্রতিনিধি
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জনগণকে আবারো তাদের সেবা করার সুযোগ দিতে ‘নৌকায়’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আরেক বার সেবা করার সুযোগ দেবেন, সেই আহ্বান জানাই।
তিনি আগামীর নির্বাচনে তার নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করে ওয়াদা চাইলে উপস্থিত জনতা দুই হাত তুলে সমম্বরে সাড়া দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
সমাবেশের আগে তিনি এখানে মোট ২৫৯৩ কোটি ব্যয়ে ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। যার মধ্যে সমাপ্ত ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং বাকি ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। যেগুলোকে তিনি খুলনাবাসীর জন্য তার উপহার হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, নৌকা স্বাধীনতা দিয়েছে, নৌকা উন্নয়ন দিয়েছে। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন বলেই আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই নৌকাই দেবে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ।
আমাদের স্মার্ট জনগোষ্ঠী হবে, স্মার্ট সরকার হবে, স্মার্ট অর্থনীতি হবে, স্মার্ট সমাজ হবে। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা তৈরি করে দিয়ে যাব, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে নির্বাচনের সময় একটা বিষয়ে সকলকে নজর রাখতে হবে-বিএনপি জানে যে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল এবং তাদের নেতা নেই মুন্ডুহীন একটা দল। একজন পলাতক আসামি আর একজন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে। সেই দল এদেশে নির্বাচন হতে দিতে চায় না। দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি বলেন, কেউ যদি এভাবে গাড়িতে আগুন আর মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়াতে চেষ্টা করে ওই হাত সেই আগুনে পুড়িয়ে দেবেন। আর উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে দেবেন যাতে এদেশের মানুষের কোন ক্ষতি করতে আর কেউ সাহস না পায়।
আমি দেখেছি সেই পোড়া মানুষগুলোর দুরাবস্থা, চোখে পানি রাখা যায় না, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওদের মধ্যে মনুষত্ববোধ নেই। দেখেছি একজন পুলিশ সদস্যকে কিভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। যে গরিব মানুষ, চাকরি করতো। কিভাবে সাংবাদিকদের বেদম পিটিয়েছে। কাজেই ওই ধরনের ঘটনা যেন আর ঘটাতে না পারে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক এলাকায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানুষের নিরাপত্তা দেবেন। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশে থেকে আপনারাও মানুষের নিরাপত্তা দেবেন, সেটাই আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা প্রাপ্তির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে দারিদ্রতা কমেছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, সাক্ষরতার হার বেড়েছে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে, উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মানুষের পুষ্টির ঘাটতি নেই। শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি, উপবৃত্তি ও গবেষণার জন্য টাকা দেয়া হচ্ছে। আইসিটিসহ বিভিন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত করে শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ভূমিহীন এবং গৃহহীন মানুষদের জমি ও ঘর দেয়া হচ্ছে। আশ্রয়ন প্রকল্প, গুচ্ছগ্রাম এবং বীর নিবাসের মাধ্যমে ঘর প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক করা হয়েছে। এছাড়াও বয়স্ক, বিধবা ও মাতৃকালীন ভাতা দেয়া হচ্ছে। জাতীয় বাজেট বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে রেলওয়ে ও বিমানের উন্নয়ন করা হয়েছে।
সমাবেশে যোগদানের আগে প্রধানমন্ত্রী খুলনা বিভাগের বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
জনসভাকে কেন্দ্র করে সমগ্র খুলনা মহানগরী যেন উৎসবের নগরী হয়ে ওঠে এবং প্রধানমন্ত্রীর আগমনে স্থানীয় জনগণের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশে দলে দলে সমাবেশে যোগ দেয়।
সকাল থেকে বিভিন্ন ব্যানার, প্লাকার্ড, ফেস্টুন হাতে নানা রঙের পোশাক পরে শ্লোগানে শ্লোগানে চারদিক মুখরিত করে দলে দলে লোক সমাবেশস্থল সার্কিট হাউজ মাঠে আসতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সমগ্র এলাকাটি এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।