ইমন হাওলাদার
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪১ এএম
প্রতীকী ছবি।
পৃথিবীর সৃষ্টি ও মানুষের আবির্ভাবের সময়কাল থেকে মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশের বিভিন্ন বাঁধা-বিপত্তিকে মোকাবেলা করে আজ এই আধুনিক মানব সভ্যতার উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রকৃতির বিরূপ পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে কতই না প্রাণী-পক্ষিকূল হারিয়ে গেছে সময়ের কাল স্রোতে। অনেক পশুপাখি পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে টিকে আছে তাদের অভিযোজন প্রক্রিয়ার ক্ষমতা সুদৃঢ় বলে। মানব সভ্যতার অস্তিত্ব টিকে আছে অভিযোজনের ক্ষমতা সুদৃঢ় বলে। মানুষ যখন খাদ্য উৎপাদন ও সঞ্চয় করার পদ্ধতি আবিষ্কার না করেছে। তখন তারা শিকার করে খাদ্য সংগ্রহ করত এবং ফলমূল আহরণ করে জীবন পরিচালনা করত। তখন মানুষ ছিল হিংস্র। তারা গাছের কোটরে, গুহায়, মাটিতে গর্ত করে বসবাস করত। নিজেদের নিরাপত্তার কথা উপলব্ধি করতে পেরে তারা দলবদ্ধভাবে বসবাস শুরু করে। এর ফলে ক্রমান্বয়ে বন্য দশা থেকে বেরিয়ে এসে তারা মানব সভ্যতার উন্মোচন করে।
বন্যদশার পরের পৃথিবী ছিল শান্তিময় সংঘাতহীন। তারা বিপদে একে অপরকে সাহায্য করত। খাদ্যদ্রব্য ভাগাভাগি করে খেত। তারা নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দলপতি নির্বাচন করতেন। তাদের মধ্যে দলপতি হিসেবে নির্বাচিত হতেন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, শক্তিশালী ও বিচক্ষণ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী কেউ। দলপতি সকলের মঙ্গলার্থে কাজ করত। কিন্তু আজ বিশ্ব দরবারে হাজারো দলনেতা, দলপতি নির্বাচন করে আধুনিক সমাজে নেই কল্যাণ। সবার মাঝে বিদ্যমান রক্ত নেশা। আমরা যেন ফিরে যাচ্ছি আদিম সেই বন্য দশায়। সভ্যতার মানেই যেন এখন আমাদের কাছে অর্থহীন। সবাই এখন নিজ স্বার্থ সিদ্ধির পিছনে ছুটছে মনুষ্যত্ব লোপ পেয়েছে কয়েক হাজার গুণ। মানুষ এখন আর মানুষের দুঃখ-বেদনা অনুভব করে না, অন্যের কষ্টে চোখে জল আসে না, অন্যের দুঃখ কষ্টের কথা শুনলে আমাদের হাসি পায়। আমরা যন্ত্রমানব হয়ে গেছি। ভালো কথা আমাদের আর এখন ভালো লাগে না। অন্যের দুঃখ কষ্ট মোবাইল ফোনে ধারন করে অনলাইনে ছেড়েই যেন দায় সারছে দায়িত্ববান লোকগুলো।
আমাদের চারপাশের দ্রব্য-সামগ্রী, দালান-কোঠা, অফিস-আদালত জীবন ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও আমাদের বিবেক বুদ্ধি লোপ পাচ্ছে। এগুলো বিকৃত হয়ে যাচ্ছে। পারিপার্শ্বিক উন্নয়নের সাথে আমাদের মনুষ্যত্বের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। না হলে কখনোই পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করবে না। আমরা পরিনত হচ্ছি রক্ত চোষা মানুষে, যাদের অন্যের জন্য কোনো মায়া-দয়া নেই। আছে শুধু নির্যাতন। যেমনটি বর্তমান বিশ্বে প্রতিটি দেশে চলমান। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ইজরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ যা জাতিসংঘের মতো একটা সংগঠনও এর নিষ্পত্তি করতে পারছে না। পুরো পৃথিবী আজ রক্ত নেশায় মেতে উঠেছে। তাই আমাদের এই সব যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করে শান্তির সুবাতাস বহমানে কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ,
দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ঢাকা কলেজ শাখা।