জাকির হোসেন
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৩, ১২:১৫ পিএম | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩, ০৫:২০ পিএম
কিংবদন্তি খেলোয়াড় রামা লুসাই। ছবি: সংগৃহীত
আমার ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি অদম্য এক আকর্ষণ ছিল। কতবার স্কুল পালিয়ে টিফিনের তাকা জমিয়ে স্টেডিয়ামে ছুটে গেছি খেলা দেখতে তা নিজেরও অজানা। বিষেষ করে বাংলার দুই জনপ্রিয় ফুটবল দল আবাহনী ও মোহামেডানের ফাইনাল ম্যাচ হলে তা আমার কাছে অনেকটাই অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি ছিল। এক অন্যরকম উন্মাদনা নিয়ে মাঠে বসে থাকতাম দু হাত আকাশের দিকে তুলে যেন প্রিয় দলতা আজকের শিরোপা লাভের স্বাদ পায়। আমার একসময়ের প্রিয় ও কিংবদন্তী হারিয়ে যাওয়া ফুটবলের স্বর্ণযুগের তেমন এক খেলোয়াড়কে নিয়েই আজকের চিঠি।
রামা লুসাই এক কিংবদন্তি খেলোয়াড়। তিনি ছিলেন টু ইন ওয়ান। মানে রামা লুসাই হকি ও ফুটবলে সমান পারদর্শী ছিলেন। দুই খেলাতেই জাতীয় দলে খেলতেন তিনি। তা ছাড়া রামা লুসাই দুই খেলাতে এতোটাই পারদর্শী ছিলেন যে, একই সঙ্গে ফুটবল ও হকিতে মোহামেডানের অধিনায়কও ছিলেন।
তার নেতৃত্বে মোহামেডান যেমন ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়, তেমনি হকিতেও। এ রেকর্ড আর কারও নেই।
এশিয়ান গেমস এলেই ৭০ বা ৮০ দশকে বাফুফে ও হকি ফেডারেশন বিপাকে পড়ে যেত। কোন জাতীয় দলে খেলবেন তিনি, ফুটবলে নাকি হকিতে। আর এই যাদুকর খেলোয়াড়কে নিয়ে পড়ে যেত রীতিমত টানাটানি।
বলা বাহুল্য, তার মতো পরিশ্রমী খেলোয়াড় খুব কমই দেখা গেছে। ১৯৮০ সালে এমনও দেখা গেছে বিকালে হকি লিগ খেলে সন্ধ্যায় আবার ফুটবল খেলছেন রামা। এই উদাহরণ কি অন্য কারও ক্ষেত্রে দেখা গেছে?
পুলিশে চাকরির সুবাদে দুই খেলাতেই রামার ক্যারিয়ার শুরু হয় পুলিশ থেকে। ১৯৭৬ সালে যোগ দেন ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানে। একইভাবে হকিতেও নাম লেখান সাদা কালোতে।
ওই সময় মধ্য মাঠে রামা-ভানুর জুটি ছিল চোখে পড়ার মতো। ১৯৭৮ সালে কিংস কাপে খেলতে যাবে জাতীয় ফুটবল দল। কিন্তু হকি ফেডারেশন তাকে ছাড়তে নারাজ।
আর তাই শেষ পর্যন্ত অবশ্য ফুটবলেরই জয় হয়েছিল। বর্তমানে রামা লুসাই ভারতের মিজোরামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
জাকির হোসেন, বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা, ঢাকা।
তথ্য সূত্র: মোহামেডান স্পোটিংফ্যানক্লাব