নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৩, ০৬:৩৭ পিএম
ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার। ছবি: সংগৃহীত
সময়টা খারাপ যাচ্ছে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের। বেশ কিছুদিন ধরেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে অনেকটা ঝামেলাতেই ছিলেন তিনি। এবার নতুন করে তার বিরুদ্ধে উঠেছে ভয়ঙ্কর সব অভিযোগ। নির্মাণাধীন ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার অন্যতম প্রযোজক তার নামে গুরুতর সব অভিযোগ দায়ের করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দপ্তরে। লিখিত অভিযোগে শাকিব খানের বিরুদ্ধে তুলে ধরা হয়েছে ঢালিউড ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্য।
শাকিব খানের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগের বিষয়ে তার সঙ্গে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি কথা বলবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার।
গতকাল বুধবার (১৫ মার্চ) গণমাধ্যমকে নিপুণ বলেন, ‘আমরা সেই প্রযোজকের লিখিত অভিযোগগুলো পেয়েছি। আমার সভাপতি এখন দেশের বাইরে আছেন। তার সঙ্গে কথা বলে আমরা পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। তবে বিষয়টি নিয়ে শাকিব খানের সঙ্গে কথা বলা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই ইস্যুতে আমরা আমাদের আর্টিস্টকে প্রায়োরিটি দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে কেউ সমিতিতে অভিযোগ দিতে পারেন। এটাও তেমনই একটি অভিযোগ। আমরা সেটা রিসিভ করেছি।’
এর আগে কোনো শীর্ষ তারকার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এভাবে কাগজে-কলমে উঠেনি। ফলে বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন ঢালিউড অংশীজনরা। যদিও সমিতির সভাপতি বর্তমানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ফিরছেন। সভাপতি ফিরলেই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করবেন।
নিপুণ বলেন, ‘শাকিব খান ইন্ডস্ট্রির একজন সুপারস্টার। আমরা তার সঙ্গে পুরো বিষয়টি আলাপ করব। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করব। মোট কথা আমরা আমাদের আর্টিস্টকে প্রায়োরিটি দেব। এরপর যিনি অভিযোগ করেছেন, তার সঙ্গেও কথা বলব। তারপর একটা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে।’
এর আগে গতকাল বুধবার বিকেলে শাকিব খানের বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ। সেখানে তিনি অপেশাদার আচরণ, চুক্তিভঙ্গ ও শ্লীলতাহানির মতো বিস্ফোরক সব অভিযোগ তুলেছেন খানের বিরুদ্ধে।
সেখানে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ সালে পূর্বচুক্তি মোতাবেক অভিনেতা শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামক সিনেমার কাজে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। আমি সেই চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রযোজক। তার মতো একজন বিখ্যাত অভিনেতাকে নিজের চলচ্চিত্রে অভিনয় করাতে পারব জেনে পুলকিত ছিলাম। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে ব্যবসাসফল হবে সেই বিশ্বাস ছিল। ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ মুক্তি পেলে সেটি হতো অস্ট্রেলিয়ায় অভিনীত প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। আমার এবং এটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের আশা ছিল সিনেমাটির হাত ধরে অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কে নতুন একটি অধ্যায় রচিত হবে। শাকিব খান একজন বিখ্যাত অভিনেতা। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের দর্শক চাহিদা অনেক। তাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল তিনি আমাদের সাথে পেশাগত আচরণ করবেন। অথচ, আজ পর্যন্ত এই সিনেমার কাজ তিনি শেষ করেন নাই।’
এই প্রযোজক ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন শাকিব খান দ্বারা যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, তার একটি তালিকা উল্লেখ করেছেন। তা হলো-
এছাড়া আরও দুটি পয়েন্টে শাকিবের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কর্মকাণ্ড ও শ্লীলতাহানির মতো বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে। যেখানে প্রযোজক তুলে ধরেন হোটেল কক্ষে শাকিব খানের আপত্তিকর জীবনাচরণ এবং শুটিং ইউনিটের সহকর্মীর শ্লীলতাহানির মতো বিব্রতকর ও বিস্ময়কর ঘটনা।
রহমত উল্ল্যাহর দাবি, পরবর্তীতে তিনি শাকিব খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘২০১৮ সালে তিনি (শাকিব খান) আবার অস্ট্রেলিয়ায় আসলে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। সামাজিক চাপে এবং আরও নিগ্রহের ভয়ে নির্যাতিতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় শাকিব সেই যাত্রায় ছাড়া পেয়ে যান।’