অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৬:২৮ পিএম
খালি গায়ে রাজপথে দাঁড়িয়ে এক যুবক নাম তার নূর হোসেন। যার কৃষ্ণবর্ণের শরীরে লেখা সাদা অক্ষরগুলো যেন চিৎকার করে বলছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক'
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনে নতুন এক মাত্র যুক্ত করে এই যুবক। আর সে জন্যই হয়তো সামরিক সরকারের অস্ত্র গর্জে ওঠে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সেই ইতিহাস আজও অমর অক্ষয় হয়ে আছে।
বুধবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত প্রখ্যাত স্থির চিত্রগ্রাহক দিনু আলম-এর ‘ফটোগ্রাফিক ডকুমেন্ট ১০ নভেম্বর ১৯৯৭’ অনুষ্ঠানে নূর হোসেনের ছবিগুলো ব্যক্তি মালিকানায় না রেখে সকলকে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন চিত্রগ্রাহক দিনু আলম। এখন যে কেউ সরাসরি ছবিগুলো ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন, তবে এক্ষেত্রে ছবির ক্রেডিট তাকে দিতে হবে।
নূর হোসেনের মৃত্যুর কয়েক মুহূর্ত আগে নূর হোসেনের কয়েকটি ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন দুই আলোকচিত্রী দিনু আলম। সেইসব ছবির মাধ্যমে শহীদ নূর হোসেনের বুকে-পিঠে লেখা স্লোগান সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যু ছোট হয়ে যায়। বড় হয়ে ওঠে প্রতিবাদ। আজও নূর হোসেনকে সেই ছবিগুলো দিয়েই মানুষ চেনে। নূর হোসেনের কথা মনে হলে, বুকে পিঠে লেখা স্লোগান ভেসে ওঠে সবার চোখের সামনে। বিশেষ বিশেষ দিবসে তার এই ছবিগুলো বার বার ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।
এই ঐতিহাসিক ছবি যারা তুলেছিলেন তাদেরকে অনেকেই চেনেন না। অনেকে জানেন না যে, নূর হোসেনের বুকের ছবি ক্যামেরায় ধারণ করেছিলেন একজন। অন্যজন ধারণ করেছিলেন পিঠের ছবি। আলোকচিত্রী পাভেল রহমান নূর হোসেনের পিঠের ছবি তুলেছিলেন। আর বুকে লেখা ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ ধরা পড়েছিল দিনু আলমের ক্যামেরায়। সাদা কালো ছবিতে নূর হোসেনের অবয়ব ভেসে উঠেছিল। সামনে থেকে ছবি তোলায় তার মুখটি চেনা হয়েছিল সবার। সবাই এখনো ছবির মুখটিই মনে রেখেছেন। এখানেই বড় সার্থকতা দিনু আলমের। এটাই তার ছবির প্রধান বৈশিষ্ট্য।
সম্প্রতি এই ছবির অপর আলোকচিত্রী দিনু আলম এসেছে ঢাকায়। ১৯৮৮ সালে তিনি পাড়ি জমান কানাডায়। এ কারণেই এতদিন তার সম্পর্কে জানতেন না অনেকেই। সম্প্রতি নূর হোসেন দিবসকে সামনে রেখে ঢাকায় এসেছেন তিনি। জানিয়েছেন এই ছবি ধারণ ও সে সময়ে তার দৃষ্টিতে ধরা পড়া বেশ কিছু বিষয়ে।
তিনি আরও বলেন, এতদিন নূর হোসেনের একটা ছবি বারবার ব্যবহার হচ্ছে। ফলে ছবির মান হারাচ্ছে। এছাড়াও ছবিগুলোর সংবাদ মূল্য এখনো রয়েছে কিন্তু আমার এই ছবিগুলোর কথা অনেকেই জানেন না। তাই আপনাদের তা জানাতে এবং ছবিগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে আগামীকাল শহীদ নূর হোসেন দিবসকে সামনে রেখে আজ আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। আমার এই ছবিগুলো ছবির ভান্ডার ‘‘ফ্লিকার ডট কম’’ এবং ‘উইকিমিডিয়া কমন্স’- এ আন্তর্জাতিক ‘ফ্রি টু ইউজ’ লাইসেন্সের মাধ্যমে সবার ব্যবহার উপযোগী করে দেয়া আছে। নিচের এই দুটো লিংকে সেগুলো পাবেন: https://www.flickr.com/photos/191064650@N04