আমল নষ্টকারী গুনাহ থেকে সাবধান

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২২, ০৪:০৪ পিএম

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মৃত্যুর পরে আখিরাত শুরু। পার্থীব জীবনের ফলাফল ভোগ করতে হবে আখিরাতে। পরকালীন জীবনের মূলধন হলো নেক আমল। কিন্তু জীবন চলার পথে ইচ্ছা ও অনিচ্ছায় এমন কিছু গুনাহ কিরি আমরা, যা কবুল হওয়া আমলগুলোকেও নষ্ট করে দেয়। তাই আমাদের আমল নষ্টকারী গুনাহ থেকে সচেতন থাকতে হবে সবসময়।

আমল নষ্টকারী  গুনাহ সম্পর্কেও আমাদের জ্ঞান থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আমল নষ্টকারী  গুনাহ গুলো হলো:

১. শিরক।

এক আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করলে জীবনের সব আমল নষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেন, ‘আপনার প্রতি ও আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই মর্মে ওহি পাঠানো হয়েছে যে, যদি আল্লাহর সঙ্গে শরিক স্থির করেন, তাহলে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন’ (সুরা জুমার: ৬৫)।

২. ইচ্ছাকৃত আসরের নামাজ ছেড়ে দেওয়া।

প্রকৃত মুমিন কোনো নামাজ ছাড়তে পারে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে আল্লাহ তা’আলা আসরের নামাজের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা নামাজের প্রতি যত্নবান হবে, বিশেষত মধ্যবর্তী (আসরের) নামাজের প্রতি। এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে তোমরা দাঁড়াবে বিনীতভাবে’ (সুরা বাকারা: ২৩৮)। বুরাইদা (রা.) বলেন, নবি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ছেড়ে দেয় তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়’ (সহিহ বুখারি: ৫৫৩)।

৩. কথা-কাজে আল্লাহর রাসুলকে কষ্ট দেওয়া।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা নবির কণ্ঠস্বরের ওপর নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চস্বরে কথা বলো, তার সঙ্গে সেরূপ উচ্চস্বরে কথা বলো না; এ আশঙ্কায় যে তোমাদের সব কাজ বিনষ্ট হয়ে যাবে অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না’ (সুরা হুজরাত: ২)।

যারা রাসুল (সা.)-এর মজলিসে ওঠাবসা ও যাতায়াত করত, তাদের এ আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করো, আর তোমরা তোমাদের আমল বিনষ্ট করো না’ (সুরা মুহাম্মদ: ৩৩)।

৪. লোক দেখানো আমল।

যারা যশ-খ্যাতির জন্য লোক দেখানো মনোভাব নিয়ে আমল করে, তাদের জীবনের সব নেক আমল বিনষ্ট করে দেওয়া হবে। আল্লাহ বলেন, ‘যারা এ দুনিয়ার জীবন আর তার শোভা সৌন্দর্য কামনা করে, তাদেরকে এখানে কর্মের পুরোপুরি ফল আমি (আল্লাহ) দিয়ে দেই, আর তাতে তাদের প্রতি কোন কমতি করা হয় না। কিন্তু আখেরাতে তাদের জন্য আগুন ছাড়া কিছুই নাই, এখানে যা কিছু তারা করেছে তা নিষ্ফল হয়ে গেছে, আর তাদের যাবতীয় কাজকর্ম ব্যর্থ হয়ে গেছে’ (সুরা হুদ: ১৫, ১৬)।

৫. দান করে খোঁটা দেওয়া।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘হে মুমিনরা, দানের কথা বলে বেড়িয়ে এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে ওই ব্যক্তির মতো নিষ্ফল করো না, যে নিজের সম্পদ লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করে থাকে এবং আল্লাহ ও আখিরাতে ঈমান রাখে না। ফলে তার উপমা হলো এমন একটি মসৃণ পাথর, যার ওপর কিছু মাটি থাকে, তারপর প্রবল বৃষ্টিপাত সেটাকে পরিষ্কার করে দেয়। যা তারা উপার্জন করেছে তার কিছুই তারা তাদের কাজে লাগানোর ক্ষমতা রাখে না। আর আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হেদায়াত করেন না’ (সুরা বাকারা: ২৬৪)।

৬. কাউকে ‘আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না’ বলা।

কাউকে ক্ষমা করা বা না করার অধিকার একমাত্র পরাক্রমশালী আল্লাহ তা’আলার। তাই ‘আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না’ এ জাতীয় কথা বলা অমার্জনীয় অপরাধ। জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর শপথ! আল্লাহ অমুক লোককে মাফ করবেন না। আর আল্লাহ তা’আলা বলেন, সে লোক কে! যে শপথ খেয়ে বলে যে আমি অমুককে মাফ করব না? আমি তাকে মাফ করে দিলাম এবং তোমার আমল নষ্ট করে দিলাম’ (সহিহ মুসলিম: ৬৫৭৫)।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh