চট্টগ্রামে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য জুলুস

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৫২ পিএম

জুলুসের মধ্য দিয়ে মিলাদুন্নবী উদযাপন। ছবি: চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

জুলুসের মধ্য দিয়ে মিলাদুন্নবী উদযাপন। ছবি: চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

পবিত্র জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরগরম ছিল দেশের দ্বিতীয় রাজধানী চট্টগ্রাম। জুলুসের মধ্য দিয়ে মিলাদুন্নবী উদযাপন করেছে সারা চট্টগ্রামবাসী। 

'নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর' ধ্বনিতে মুখরিত ছিল বন্দরনগরী ও এর আশেপাশের এলাকা। নানান রাঙের ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন ছিলো আশেকানের হাতে।

আজ রবিবার (৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী উদযাপিত ৫০ তম মিলাদুন্নবীর জুলুসে নেতৃত্ব দেন পাকিস্তান থেকে আগত আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মজিআ)। প্রধান অতিথি ছিলেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মজিআ)। বিশেষ অতিথি ছিলেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মজিআ)।  

রবিবার সকালে ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে জুলুস শুরু হয়। বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, কাতালগঞ্জ, চকবাজার অলিখাঁ মসজিদ, প্যারেড মাঠের পশ্চিম পাশ, চট্টগ্রাম কলেজ, গণি বেকারি, জামালখান, আসকার দীঘির উত্তর পাড়, কাজীর দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, ২ নম্বর গেইট, মুরাদপুর হয়ে পুনরায় মাদ্রাসা মাঠে ফিরে আসে জুলুস।

জুলুস শুরুর আগে হুজুর কেবলা আলমগীর খানকা-এ-কাদেরিয়ায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় করোনা মহামারি থেকে মুক্তি ও বিশ্ব শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।

জুলুসে অংশ নিতে ভোর থেকে নবীপ্রেমী মানুষ জড়ো হতে থাকেন ষোলশহরের জামেয়া মাদ্রাসা মাঠ ও আশপাশের এলাকায়। জুলুসের রোডম্যাপের মোড়ে মোড়ে অপেক্ষা করেন স্বেচ্ছাসেবক ও হুজুর কেবলার ভক্তরা। জুলুসকে ঘিরে মুরাদপুর, বিবিরহাট, মাদ্রাসা এলাকায় শত শত টুপি, মাস্ক, আতর, সুরমা, তসবিহ, পাঞ্জাবি, ইসলামি বই, খাবার দোকান বসেছে।

করোনা মহামারিতে দুই বছর সীমিত পরিসরে হয়েছিল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)। এবার হিজরি বর্ষ অনুযায়ী জুলুসের ৫০তম আয়োজন। তাই জুলুসকে ঘিরে চট্টগ্রাম সেজেছে বর্ণিল সাজে।

জুলুসে অংশ নিয়ে মাওলানা হাবিবুর রহমান আনসারী বলেন, আজকের জুলুসে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে। এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণজমায়েত হিসেবে গেনজবুকে রেকর্ড করার দাবি জানাচ্ছি। 

গাউসিয়া কমিটি, আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন তোরণ, সড়কদ্বীপ, সড়ক বিভাজক সাজিয়েছে। জুলুসের মেহমানদের শরবত, চকলেট, খেজুর, জিলাপি, জুস বিতরণ করছেন অনেক ভক্ত। নারী, শিশুরা বিভিন্ন ভবনের ছাদ, জানালা দিয়ে স্বাগত জানান জুলুসকে।

হুজুর কেবলার জন্য বিশেষভাবে সাজানো গাড়িতে ছিলেন আনজুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান প্রমুখ।

গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, জুলুসে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের (এএসএফ) ৩ হাজার, গাউসিয়া কমিটির নেতা-কর্মী ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র মিলে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। যথারীতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।  

জুলুস শেষে দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত হয় মাহফিল। এরপর জোহরের নামাজ শেষে দোয়া ও আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এ মিলাদুন্নবীর জুলুস। মোনাজাত পরিচালনা করেন আল্লামা সৈয়্যদ মোহাম্মদ তাহের শাহ (মজিআ)।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh