চাকরির পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কা, হলেই ঈদ করলেন তারা

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২২, ০৩:৩৪ পিএম | আপডেট: ০৪ মে ২০২২, ০৩:৩৪ পিএম

ঢাবির আবাসিক হলেই ঈদ করেছেন তারা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাবির আবাসিক হলেই ঈদ করেছেন তারা। ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্য ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়া তেমন কোনো বড় উৎসব নেই। এ দুই উৎসব পরিবার থেকে দূরে অবস্থান করে উদযাপন করা সম্ভব নয়। তাই ঈদ আসলে সবাই পরিবারের কাছে ছুটে যান। তেমনি এবারের ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) বন্ধ হওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থী বাড়িতে ছুটে গেছেন। কিন্তু চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি, আসন্ন বিসিএস পরীক্ষা আর ক্যারিয়ার নিয়ে নানা হিসেবের ফেরে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী হলেই ঈদ উদযাপন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাবির আবাসিক প্রতিটি হলেই গড়ে একশো’র বেশি শিক্ষার্থী এবারের ঈদের ছুটিতে অবস্থান করেছেন। পরিবারের সাথে তাদের ঈদ উদযাপন করা হয়নি।

সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের অনেককেই গতকাল মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদের দিন ঈদের নামাজ শেষে অধিকাংশই সময় হলের রিডিং রুমে অবস্থান করেছেন। কেউ খানিকটা ঘোরাঘুরি সেরে আবার বসে গেছেন পড়ার টেবিলে। ঈদের বন্ধে ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় খাবারের সমস্যার সাথেও তারা মানিয়ে নিয়েছেন। চলমান ঈদের ছুটিতে কেউ কেউ নীলক্ষেতের রেস্তোরাঁ বা আবার কেউ জগন্নাথ হলের ক্যান্টিনে যান প্রতিদিনের খাবার খেতে। 

ঈদে হলে অবস্থান করা বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ জানান, বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। এখন ঈদ উদযাপনে বাড়ি গেলে পড়ালেখার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যেত। তাই এখানেই ঈদ করছেন তিনি। ঈদে বাড়ি না যেতে পেরে অবশ্যই কিছুটা খারাপ লাগা কাজ করছে। তবে এটাকে স্যাক্রিফাইস হিসেবে ধরে নিলাম। ভবিষ্যতে পরিবারকে ভালো রাখবো বলেই এখন পরিবার থেকে দূরে আছি। 

হাজী মুহাম্মদ মহসীন হলের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাবিল হাসান বাড়ি যাননি কোচিংয়ের ভর্তি পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থীদের সময় দিতে। ঢাবিতে ভর্তিচ্ছুদের নিয়ে একটি ব্যাচ শুরু করেছিলেন তিনি। শিক্ষার্থী বাড়তে থাকায় তার দায়িত্বও বাড়ে। বাড়িতে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছে থাকলেও ওই শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণের কথা ভেবে রয়ে গেছেন তাদের সাথে।

নাবিল বলেন, ক্যান্টিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাবারের কষ্ট হচ্ছিল। তবে বাকিদের সাথে সমন্বয় করে খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। আবার তার কোচিংয়ের শিক্ষার্থীরাও তার জন্য খাবার নিয়ে এসেছে। এবারের ঈদ ভিন্ন অভিজ্ঞতা দিচ্ছে।

সূর্যসেন হলের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বললেন, দুই বছর করোনার কারণে পড়াশোনায় বিশাল গ্যাপ হয়েছে। সময়মতো গ্র্যাজুয়েশন শেষ না হওয়ায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। এলাকায় গেলেই মানুষ জানতে চায় এখনো কিছু করছি কি-না! একটা কিছু করতে পারলে গর্ব করে বাড়ি যাবো। ঈদটা বাবা-মা, ভাই-বোনদের সাথে করতে না পারাটা কষ্টের। এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh