নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৫৮ পিএম
কথা বলছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর
যাদের ব্যর্থতায় নদী ভাঙছে, ক্ষতিগ্রস্তদের ‘সেই মন্ত্রণালয়’ থেকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের’ এক সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি মনে করি ট্রেন দুর্ঘটনা, লঞ্চ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যদি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় তবে যারা নদী শিকস্থি, নদী যাদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলছে তাদেরকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিৎ। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যাদের ব্যর্থতার জন্য এরকম বছরের পর বছর এরকম হচ্ছে তাদেরই ক্ষতিপূরণটা দিতে হবে।’
এ এস এম আলী কবীর বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার সাত বছরের মধ্যে কমিশন ৬০ হাজার দখলদারের তালিকা করেছে। এর মধ্যে ১৮ হাজার উচ্ছেদ হয়েছে। কাজটা কিন্তু সহজ নয়। কারণ আপনারা জানেন নদী দখলদারেরা অনেক শক্তিশালী। তবে আইন তারচেয়েও শক্তিশালী, সরকারের হাত আরও লম্বা। নদী দখল করে কেউ পার পাবেন না।’
নদী দূষণ ঠেকাতে না পারলে ‘ভয়াবহ’ পরিণতি হবে উল্লেখ করে নদী কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঢাকার চারপাশের নদীর দূষণটা মারাত্মক। এটা মনে হয় পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, রেকর্ড সৃষ্টিকারী। ঢাকা এখন পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত নগরী। ঢাকায় সুস্থ শরীরে বেঁচেবর্তে থাকা মনে হয় আল্লা তায়ালার একটা কুদরত। এভাবে চলতে থাকলে ঢাকার প্রতি ঘরে ঘরে একটা ভয়ঙ্কর রোগ এসে ঢুকবে, এর কোনো চিকিৎসা থাকবে না।’
বিশ্ব নদী দিবস উদযাপন উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে ‘নদী বাঁচাও আন্দোলন’। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রবিবার আন্তর্জাতিকভাবে নদী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
দখল-দূষণ প্রতিরোধের তাগিদ দিয়ে নদী বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান আনোয়ার সাদাত বলেন, ‘কঠিন সত্য হচ্ছে, আমাদের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে দূষণের ওপর। পৃথিবীর সব থেকে দূষিত নদীগুলো আমাদের ঢাকার চারপাশে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি বিভিন্ন সংস্থার হিসেবে দেশে নদী আছে ২৩০টি, উইকিপিডিয়ায় বলা হয় ৪০৫ টি, শিশু একাডেমির বিশ্বকোষে নদীর সংখ্যা বলা আছে ৭০০টি, আমরা বলছি দেড় হাজারের ওপর, আবার কেউ বলেন দুই হাজারের ওপর। নদীর আসলে সংখ্যা কতো? সেটা জাতির সামনে আনতে হবে।’
সভায় আনোয়ার সাদাতের সভাপতিত্বে নদী কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার আহমেদসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, গবেষক ও সরকারি কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
এসময় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ‘নদী বাঁচাও আন্দোলনের’ নেতারা নদী-জলাশয় দখল, দূষণের চিত্র তুলে ধরে নদী রক্ষা কমিশনের কাছে প্রতিকার চান।
কমিশনকে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া, পৃথক নদী ট্রাইবুনালে নদীর দখল ও দূষণকারীদের বিচার দাবি করেন তারা।