হুমকির মুখে হরিপুর জমিদারবাড়ি

আব্দুল আউয়াল, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২১, ০২:২৫ পিএম | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২১, ০২:২৭ পিএম

হরিপুর জমিদারবাড়ি

হরিপুর জমিদারবাড়ি

ঠাকুরগাঁও থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী উপজেলা হরিপুর। উপজেলায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়ি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে বাড়ির অধিকাংশ স্থাপনা। ঐতিহ্য এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে জমিদারবাড়ির সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

২০২০ সালে ভারি বর্ষণের ফলে জমিদারবাড়ির কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। সেই বছরের ১৫ জুলাই শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়ির সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের দাবি, শত বছরের ঐতিহ্য জমিদারবাড়ি প্রশাসনের অবহেলার কারণে ধ্বংস হতে চলেছে। দ্রুত সংস্কার না হলে এটি ভেঙে পড়বে। 

জানা যায়, মুসলিম শাসনামলে ১৪০০ খ্রিস্টাব্দে ঘনশ্যাম কুন্ডু নামের এক ব্যবসায়ী কাপড়ের ব্যবসা করতে আসেন ঠাকুরগাঁও জেলা সদর থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে হরিপুর উপজেলায়। তখন মেহেরুন্নেসা নামে এক বিধবা মুসলিম নারী এ অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। খাজনা দিতে না পারায় মেহেরুন্নেসার জমিদারির কিছু অংশ নিলাম হয়ে গেলে ঘনশ্যাম কুণ্ডু কিনে নেন। ঘনশ্যামের বংশধরদের একজন রাঘবেন্দ্র রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ব্রিটিশ আমলে হরিপুর রাজবাড়ির কাজ শুরু করেন; কিন্তু তার সময়ে রাজবাড়ির কাজ শেষ হয়নি। রাঘবেন্দ্র রায়ের ছেলে জগেন্দ্র নারায়ণ রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে রাজবাড়ির নির্মাণকাজ সমাপ্ত করেন।

জগেন্দ্র নারায়ণ রায়ের সমাপ্ত করা রাজবাড়ির দ্বিতল ভবনে লতাপাতার নকশা এবং পূর্ব দেয়ালের শীর্ষে রাজর্ষি জগেন্দ্র নারায়ণের চৌদ্দটি আবক্ষ মূর্তি রয়েছে। এক শতাব্দীরও বেশি পুরোন অট্টালিকাটির দৃষ্টিনন্দন কারুকাজের বিলুপ্তপ্রায় নিদর্শনগুলো প্রাচীনতম বিবেচনায় খুব মূল্যবান না হলেও স্থাপত্য কীর্তি হিসেবে এখনো মানুষকে কাছে টানে। পরিত্যক্ত বাড়িটিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সুদা বলেন, সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে রাজবাড়ির দরজা-জানালাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। সন্ধ্যায় চলে মাদক সেবনসহ নানা অপকর্ম। তদারকি না থাকায় বাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে গজিয়েছে গাছপালা। খসে পড়েছে পলেস্তারা। গত বছর সংস্কারের অভাবে জমিদারবাড়ির এক অংশ ভেঙে পড়ে। এভাবে যদি পড়ে থাকে তাহলে দেখা যাবে এটি একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে।

হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়ি সংস্কার করা হয় না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এগুলো সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আদেশ পেলেই সংস্কার করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh