মাসরুর আরেফিন
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০২:৩৪ পিএম
ভিড় করে আসছে মৃত মানুষেরা চারপাশে,
তারা জিজ্ঞেস করছে যারা বেঁচে আছে তারা বেঁচে আছে কেন?
তারা জিজ্ঞেস করছে এই কথা রাত গাঢ় হয়ে এলে,
যখন আকাশে আজবনক্ষত্র ‘অনুরাধা’ ভেসে উঠছে
বায়ুমণ্ডল সাফ হয়ে গেছে বলে।
আমি তাই তোমাকে বলে দিচ্ছি শিউলিঝাড়ের দিকে চোখ রেখে-
আমরা ঠিক বেঁচে নেই,
ইতস্তত করছি শুধু টিকে থাকা নিয়ে,
আর তোমাদেরও মঙ্গলচিন্তা করছি এক মিনমিনে সুরে-
ধ্বনিহীন-শব্দহীন এক প্রসঙ্গউত্থাপন মতো সেটা,
কারণ জানি না তো জীবন কীরকম করে বয়ে যায় ওইপারে,
সেখানেও এটা কি এপারের ঝিরিঝিরি আওয়াজের মতো,
যাতে স্বপ্রণোদিত তান-মূর্ছনা-গর্জনও থাকে মাঝে মাঝে?
আয়না আর রত্ন কি ওপারেও আছে-মানিব্যাগ, পার্স, ভোগতৃষ্ণা, বেচাকেনা ইত্যাদি?
সেখানেও কি রোজ বাজার বসে ব্যঙ্গ ও বক্রোক্তি নিয়ে
বট আর অশ্বত্থের গোড়া বেড় দিয়ে,
সেখানেও কহরদরিয়া ধলেশ্বরী এইসব নামে নদী আছে,
আছে ধানসিড়ি নামে কোনো খাল?
আর সময়ের সাথে ধীরে ধীরে সেখানেও কি নদীপথ গতি পরিবর্তন করে
বেড়ে ওঠা মানুষের মতো, চিরকাল-কার্যকুশলভাবে
সেখানেও কি সবকিছু বদলে যায় কালপ্রবাহের সাথে, প্রকারান্তরে?
এসবের উত্তর যেহেতু জানা নেই,
যেহেতু বিষয়গুলো এই-আর-কি কথাপ্রসঙ্গে আসে,
তাই এমন না যে ভয় লাগছে খুব;
সামান্য ঘাম হচ্ছে শুধু
আর মাথা দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে রেখে
ঘুমিয়ে যাচ্ছি হুটহাট অভাবনীয়ভাবে।
মনে হচ্ছে তোমরা কি ওইপাশে আর নর-নারী নও?
তোমরা কি ওইপাশে বংশলতিকাহীন শুধু কোনো ছায়াছায়া দাগ?
এইপাশে কোনো কি দেনা বাকি রেখে গেছ
(আহা দেনা তো সবার কাছে সবারই কিছু না কিছু আছে),
আর তাই কি বারবার বিহ্বল ও কুণ্ঠিত
এসে দাঁড়াচ্ছ এই ফেলে আসা দ্বারা-দিয়ে-কর্তৃক নৈকট্যের পাশে,
এবং জিজ্ঞেস করছ আমরা তোমাদের রেখে
বেঁচে আছি কেন-
জিজ্ঞেস করছ মিছিমিছি,
স্রেফ কী আর বলবে তা বুঝে পাচ্ছ না বলে?