এস এস শোহান
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ১১:১১ এএম
প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমফানের কারণে সুপারির ফলন কম হলেও দামে খুশি গৃহস্থরা। সুপারির উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা চেয়েছেন এলাকাবাসী। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দাবি উপজেলার সীমান্তে তালেশ্বর স্লুইস গেট থেকে লবণাক্ত পানি প্রবেশ বন্ধ করা গেলে সুপারির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
বাগেরহাটের কচুয়ায় হাটে হরদম কেনা কাটা চলছে সুপারির। প্রতি কুড়ি সুপারি আকার ভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বিক্রেতা ও ক্রেতার সমাগম চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যান, নছিমন, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলে গৃহস্থরা সুপারি নিয়ে আসছেন এই হাটে। সুপারির পাইকাররা সুপারি ক্রয় করে নিজেদের গদিতে (ভাড়া করা ঘর) স্তূপ করে রাখছেন। কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের সুপারি বিক্রেতা তারক বৈরাগী বলেন, আমরা এক সময় প্রচুর পরিমাণ সুপারি পেতাম; কিন্তু এ বছর ঘূর্ণিঝড় আমফানে সুপারির মঞ্জুরি (ফুল) পড়ে যাওয়ায় সুপারি কম হয়েছে। তবে এবার দাম বেশি হওয়ায় পুষিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর যে সুপারির দাম বৃদ্ধি থাকবে তা তো নয়। এজন্য সুপারির উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করা উচিত।
কচুয়া উপজেলার পদ্মনগর গ্রামের সালাম শেখ, লতিফ, আবুল হোসেন, নুরুসহ কয়েকজন বলেন, আমাদের এলাকাটি ছিল মিষ্টি পানির। একারণে সুপারির ফলন ভালো হতো। বর্তমানে খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ত পানি প্রবেশ করায় সুপারির উৎপাদন কমে গেছে।
কচুয়া বাজার সুপারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ বাওয়ালী বলেন, আমরা এই সুপারি কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকি। কিছু সুপারি মদাই (৬০ থেকে ৭৫ দিন পানিতে ভিজিয়ে ওঠানো হয়) এবং কিছু সুপারি শুকানোও হয়। সুপারির মৌসুম শেষে মদা ও শুকনো সুপারিরও চাহিদা রয়েছে। আমরা মোটামুটি এই বাজারে সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করে থাকি।
কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার হাদিউজ্জামান বলেন, আমাদের কচুয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সুপারির উৎপাদন হয়। উত্তরাঞ্চলের অনেক জেলায় এই সুপারি রফতানি হয়।
কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. লাভলী খাতুন বলেন, কচুয়া উপজেলায় আঠারো হাজার কৃষক সুপারির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। এবার ঝড় ও লবণাক্ততার কারণে সুপারির উৎপাদন কমে গেছে।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সঞ্জয় দাস বলেন, সুপারি এবং নারিকেলের জন্য বাগেরহাট জেলা প্রসিদ্ধ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কারণে সুপারির উৎপাদন কমে গেছে। সুপারির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বাগান কুপিয়ে গোবর সার দেওয়া যেতে পারে। এ জন্য আমরা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।