আজিজুর রহমান পায়েল,
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:৪০ পিএম
হুমকির মুখে পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে সাড়া জাগানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী পাদুকা শিল্প। প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি, প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ থেকে চোরাই পথে অবাধে জুতার প্রবেশসহ বিভিন্ন কারণে সম্ভাবনাময় এই শিল্পটি অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে যে হারে পাদুকা কারখানা বন্ধ হয়েছে তা রীতিমতো উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।
মাত্র কয়েক বছর আগেও জেলায় ৫ শতাধিক পাদুকা কারখানা থাকলেও এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ টিতে। কোনো রকমে টিকে থাকা অবশিষ্ট কারখানাগুলো চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এর মধ্যে করোনার প্রভাব যুক্ত হওয়ায় সম্ভাবনার হাতছানি দেয়া শিল্পটি থমকে গেছে। ব্যবসায়ীদের মতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না করা গেলে জেলার এই শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। সরকার এই শিল্পের প্রতি সহানুভূতিশীল না হলে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। যার প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতেও।
এ বিষয়ে বিভিন্ন পাদুকা কারখানা মালিকদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, এক সময় বিদেশ থেকে আমদানি করা জুতা এখানকার বাজার দখল করে রাখলেও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে উন্নতমানের জুতা তৈরি করা হচ্ছে। তবে চলমান করোনা সংকটে জুতা তৈরির বিভিন্ন উপকরণের মূল্য অধিক বেড়ে যাওয়ায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। শ্রমিক খরচ মেটানোসহ সব ধরনের খরচ মিটিয়ে কাঙ্ক্ষিত মুনাফা অর্জিত হচ্ছে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাদুকা শিল্প সমিতির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বহু বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাদুকা কারখানাগুলো দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়েছে। এই শিল্পটির উন্নয়নে বিভিন্ন সরকার নানা সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও তার আশানুরূপ প্রতিফলন হয়নি। বাধ্য হয়ে অনেকে এই পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।
এ ছাড়াও করোনার কারণে দীর্ঘদিন লকডাউন এবং নতুন করে করোনার ২য় ঢেউ শুরু হওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা সর্বস্বান্ত হওয়ার শঙ্কাও করছেন তিনি। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে জুতা তৈরির উপকরণের ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে আনা এবং চোরাই জুতার প্রবেশ বন্ধসহ আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি কারখানা পরিচালনার জন্য সরকারিভাবে জায়গা বরাদ্দের দাবি জানান তিনি। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্টরা তৎপর হবেন এমনটা প্রত্যাশা এই শিল্প সংশ্লিষ্টদের।