নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২১, ১০:০১ এএম
ফেডারেশন কাপের ফাইনাল চলছে, অথচ নেই আবাহনী-মোহামেডানের মতো দল। বসুন্ধরা কিংস ও সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের লড়াই দেশের ফুটবলে নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে। দর্শক সমর্থক না থাকলেও ফুটবলে সাফল্য পাওয়া যায়, সেটি আবারো প্রমাণিত হয়েছে। টানা তিন ফেড কাপের ফাইনালে খেলে সর্বশেষ দুটি আসরের শিরোপা জিতেছে বসুন্ধরা। আর প্রথমবার ফাইনালে উঠে ১-০ গোলে হেরে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে সাইফ এসসিকে।
ফেড কাপের দুটিসহ ঘরোয়া ফুটবলের শীর্ষ লিগে ওঠার পর এটি বসুন্ধরা কিংসের চতুর্থ ট্রফি জয়। ২০১৮ সালে অভিষেক আসরে দলটি জিতেছিল প্রিমিয়ার লিগ ও স্বাধীনতা কাপের শিরোপা। অসমাপ্ত মৌসুমে কেবল ফেডারেশন কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছিল। এবার মৌসুম শুরুর টুর্নামেন্টের শিরোপা ধরে রাখল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন দলটি। ২০১৬ সালে জন্ম নেওয়া সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর মধ্যে প্রথম পেশাদারিত্ব নিয়ে আসে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে আবেদন করে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে (বিসিএল) খেলে তার পেশাদার লিগে প্রবেশ করে।
২০১৭ সালে সেই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথ ধরেই আগমন ঘটে বসুন্ধরা কিংসের। ২০১৮ সালে বিসিএলে শিরোপা জিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) জায়গা করে নেয়। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের মালিকানায় রয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। ঠিক তেমনি বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে কিংস নামধারী ক্লাবটি। সারা দুনিয়াতেই পেশাদারী মনোভাবাপন্ন ফুটবলই যখন অগ্রগণ্য সেখানে বাংলাদেশ ঠিক তার উল্টো পথে হাঁটছে। সেখানে ব্যতিক্রম বসুন্ধরা কিংস আর সাইফ এসসি।
ক্লাবের অবকাঠামো থেকে শুরু করে সবকিছুই পেশাদারী অবকাঠামোয় পরিচালিত হয়ে থাকে। দুটি ক্লাবই পেয়েছে এএফসি ক্লাব লাইসেন্স। পেশাদার লিগের দলবদলের একেবারে শেষদিকে ট্রান্সফার ফির মাধ্যমে জাফর ইকবালকে মোহামেডানের কাছে বিক্রি করে দেয় সাইফ। দেশের ফুটবল ইতিহাসে এটি প্রথম ঘটনা। পুরোপুরি পেশাদারিত্ব বজায় রেখেই এমনটি করা হয়েছে। যা বাংলাদেশে অনেকটাই অকল্পনীয় ব্যপার।
বসুন্ধরা কিংস তো আরও বেশি পেশাদারী। করপোরেট হাউস থেকে ক্লাবে রূপান্তরিত হওয়ার পর রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছে। বিপিএলের প্রথম আসরে ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিততে না পারলেও লিগ ও স্বাধীনতা কাপে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে তারা। এবার টানা তৃতীয়বারের মতো মৌসুম শুরুর টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নেয় বসুন্ধরা। সেখানে জমজমাট লড়াইয়ের আভাস এরই মধ্যে মিলেছে। দারুণ খেলে অপরাজিত থেকে দুটি ক্লাবই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের জন্য নিজেদের তৈরি করেছে। এখন শুধু মাঠে নামার অপেক্ষা।
এবারের ফেড কাপের শিরোপা যে দল জিতবে তারাই এএফসি কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। সে হিসেবে বসুন্ধরা কিংস নিশ্চিত করল এএফসি কাপে খেলাও। তবে শিরোপা জিততে না পারলেও লিগের জন্য দারুণ আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করল সাইফ স্পোর্টিং। অপেক্ষাকৃত তরুণ দল নিয়ে দারুণ লড়াই করা দলটি শিরোপা লড়াইয়ে যে থাকবে- এটা অনেকটা নিশ্চিত করে বলা যায়।