প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:২৪ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী জো বাইডেনের অভিষেক হবে এ বছর ২০ জানুয়ারি; কিন্তু তার অভিষেক আয়োজনকে ঘিরে বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছে এফবিআই। গত সপ্তাহে মার্কিন গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত ক্যাপিটল হিলে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে লজ্জাকর এক ঘটনা। ক্যাপিটল হিলে সংঘটিত সহিংসতায় মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
করোনার কারণে এবারে বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত আকারে অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে অভিষেক অনুষ্ঠানকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ ও সহিংসতার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে এফবিআইর অভ্যন্তরীণ বুলেটিনে। এবিসির মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়। ক্যাপিটল হিলে সশস্ত্র বিক্ষোভের সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করেছিল সংস্থাটি।
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন ৬ জানুয়ারি হবে ‘বোঝাপড়ার দিন’। নভেম্বরের নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানেরও ডাক দিয়েছিলেন তিনি। ট্রাম্পের আইনজীবী, রুডি জুলিয়ানি বলেছিলেন, নির্বাচনী ফল নিয়ে বিতর্কের মামলায় জিততে হবে ‘সম্মুখ সমরের মধ্য দিয়ে’।
ট্রাম্প বিক্ষোভাকারীদের মিছিল করে ওয়াশিংটনে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বিক্ষোভকারী জমায়েতকে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র বলেন, ‘এটা এখন আর তাদের রিপাবলিকান পার্টি নয়, এটা এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি’ অবশ্য সহিংসতার এক পর্যায়ে তিনি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা ঘরে ফিরে যান’।
ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে উন্মত্ত জনতাকে ‘অভ্যুত্থানে প্ররোচনা’ দেওয়ার অভিযোগ আনার পরিকল্পনা করছেন। প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্টের জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছে ডেমোক্র্যাটরা। যদিও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে জানুয়ারির ২০ তারিখে।
এতকাল বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের সবক দিয়ে এসেছে; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রই এখন মোকাবেলা করছে এক সংকটকাল। ক্যাপিটল হিলে সহিংসতার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তীব্রভাবে সমালোচিত হচ্ছেন বিশ্বে নেতৃবৃন্দের কাছে। সাধারণ মানুষের কাছেও যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র তামাশায় পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে বিশ্ববাসীর সামনে উঠে এসেছে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে। এখন অপেক্ষা ২০ জানুয়ারির এবং বাইডেনের শপথ গ্রহণের। ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাল ধরার পর যুক্তরাষ্ট্রের ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র শোধরাতে আদতে কী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন? নাকি যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবেলা করতে হবে আরও বড় কোনো সহিংসতা? যা সেখানকার গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতাকে ঠেলে দিতে পারে হুমকির মুখে।
-সম্পাদকীয়
সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল
(১৪ জানুয়ারি, ২০২০)