ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চান্দুরা-আখাউড়া সড়কের বেহাল দশা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১১:২৯ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা-আখাউড়া সড়ক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিশালাকার গর্ত আর সড়কজুড়ে পিচ উপড়ে ভেতরের ইট-সুরকী বেরিয়ে বড় আকারের খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। 

এতে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই চলছে লক্ষাধিক মানুষসহ সব ধরনের যানবাহন। সে সাথে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে যাওয়ায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। তবে এক বছর আগে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতর সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও কচ্ছপ গতিতে কাজ করায় কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই। এছাড়া নির্ধারিত সময়ে সড়কের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে রয়েছে সংশয়।

প্রতিদিনই যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, সাড়ে ১৭ কিলোমিটার সড়কটি দিয়ে বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষসহ উপজেলার আশপাশের কয়েকটি উপজেলার যানবাহন চলাচল করে থাকে। সড়কটির বেহাল দশার কারণে সবাইকে অনেক কষ্ট করে চলাচল করতে হচ্ছে। গর্তের কারণে সড়কের অধিকাংশ স্থান কঙ্কালসারে পরিণত হয়েছে।


দুর্ভোগ লাঘবে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট প্রায় ২১ কোটি টাকা ব্যায়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করে। এ কাজ শেষ হওয়ার কথা ২৪ আগস্ট ২০২১ সালের মধ্যে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মৈত্রী এন্টার প্রাইজ সড়কটির সংস্কার কাজ করছে। গত এক বছরে সড়কের মাত্র ৩২ ভাগ কাজ হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে সড়কের কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় প্রতিদিনই এই সড়কের কোন না কোনা স্থানে দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে বিজয়নগরের নোয়াগাঁও থেকে সিঙ্গারবিল পর্যন্ত সড়কটির বেহাল অবস্থা। দিনের পর দিন জনদুর্ভোগ বাড়ছে। কয়েক বছর ধরে কেবল সড়ক সংস্কারে কাজ করা হবে বলে শুনেই যাচ্ছেন তারা; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাদের মতে এই সড়ক দিয়ে একদিন যাতয়াত করলেই সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচলে কি পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হয় তা বলার সীমা রাখে না। 

স্থানীয় এলাকবাসীর অভিযোগ, সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হলেও গুণগত মান নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। সে সাথে কাজের ধীর গতির কারণে দ্রুত ও নির্ধারিত সময়ে সড়কের কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে এলাকাবাসী শঙ্কায় রয়েছেন। 

তারা বলেন, কাজের গুণগত মান বুঝে নেয়া এলাকাবাসীর দায়িত্ব সে হিসাবে যখন কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা চাই সংশ্লিষ্টরা কাজের মান ঠিক রেখে দ্রুত সড়কের কাজ শেষ করে জনগনকে এই সীমাহীন দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করবে। 

তবে কাজের ধীর গতির জন্য করোনার প্রাদুর্ভাবকে দায়ী করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মৈত্রী এন্টারপ্রাইজের সাইড ইঞ্জিনিয়ার আসাদুল ইসলাম আসাদ বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ ৭ মাস শ্রমিক সংকট থাকায় সঠিকভাবে কাজ করা যায়নি। পাশাপাশি চাহিদামতো মালামালও আনা যায়নি। কাজের গুণগুত মান নিয়ে যে অভিযোগটি উঠেছে তা ভিত্তিহীন। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের বিজয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান ভূইয়া বলেন, সড়কটির সংস্কার কাজ চলছে। কাজের গুণগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করতে পারবো। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh