নানা রকমের মাস্ক

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০৯:৪৭ এএম

করোনার গ্রাস থেকে বাঁচতে মাস্ক পরাটা এখন বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে মাস্কের ছড়াছড়ি। মাস্কের প্রধান কাজই হলো ধুলাবালি, ফুলের রেণু, ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদি যেন আমাদের শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা।

তবে সব ধরনের মাস্ক সমানভাবে ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, ধুলাবালি প্রভৃতি থেকে রক্ষা করতে পারে না। এত এত মাস্কের ভিড়ে আপনি কোনটি ব্যববহার করবেন? কাপড়ের মাস্ক, সার্জিক্যাল মাস্ক না এন ৯৫; কোন মাস্ক কতটা নিরাপদ? কত বারই বা ব্যবহার করা যাবে?

বাজারে নানা ধরনের মাস্ক নিয়ে আমাদের আজকের প্রতিবেদন। 

অষ্টাদশ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম সার্জিক্যাল মাস্কের ব্যবহার শুরু হলেও স্প্যানিশ ফ্লু সংক্রমণের আগ অবধি এর পরিচিতি একেবারেই ছিল না বলা যায়। ১৯১৯ সালের স্প্যানিশ ফ্লুর তাণ্ডবে সারাবিশ্বে প্রায় ৫ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। কোনো কোনো হিসেবে এই সংখ্যা আরো বেশি। বর্তমানে চলমান বৈশ্বিক মহামারিতে চিকিৎসকরা বার বার স্প্যানিশ ফ্লুর সময়কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সেইসাথে তখনকার সার্জিক্যাল মাস্ক ও গজ মাস্কের সুফল মানুষের উদ্দেশে প্রচার করেন। মাস্ক যদি পরিধান করতেই হয় তবে সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা নির্দেশিকাগুলো অবশ্যই মানতে হবে। অন্যথায় উপকারের বদলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন যে কেউ। 

বিভিন্ন ধরনের মাস্ক: বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু মাস্ক হলো- এন ৯৫ রেসপিরেটর, সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক, সিল্ক বা রেশমি কাপড়ের তৈরি মাস্ক ও সাধারণ কাপড়ের মাস্ক।

এন ৯৫ মাস্ক: করোনার জীবাণু প্রতিরোধ করতে বিশেষজ্ঞরা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকর বলেছেন এন৯৫ মাস্ককে। কারণ, এটি ৯৫ শতাংশ ধুলা ও জীবাণুকে নাকে-মুখে ঢোকার হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। সবচেয়ে ভালো সুরক্ষা দেয় এন ৯৫ রেসপিরেটর মাস্ক। সব ধুলাবালি, ফুলের রেণু, ব্যাক্টেরিয়া থেকে এটি শতভাগ এবং ভাইরাস থেকে ৯৫ ভাগ সুরক্ষা দেয়।

সিল্ক বা রেশম কাপড়ের তৈরি মাস্ক: সিল্ক বা রেশম কাপড়ের তৈরি মাস্কও করোনাভাইরাস ঠেকাতে এন-৯৫ মাস্কের মতো কার্যকর বলে সম্প্রতি এক গবেষণার ফলাফলে উল্লেখ করা হয়। সিল্ক বা রেশম কাপড়ে জীবাণু প্রতিরোধের ক্ষমতা সাধারণ কাপড়ের তুলনায় অনেক বেশি। এগুলো ব্যবহারেও আরামদায়ক আর এতে নিঃশ্বাস নেয়ার ক্ষেত্রেও কোনো সমস্যা হয় না। সিল্কের মাস্ক ধুয়ে বার বার ব্যবহার করা যায়। পছন্দের রঙ ও ডিজাইনে পাওয়া যায়। 

সাধারণ কাপড়ের মাস্ক: সাধারণ কাপড়ের মাস্কগুলো ভাইরাস ও ধুলাবালি থেকে কোনোরকম সুরক্ষা না দিলেও ব্যাক্টেরিয়া ও ফুলের রেণু থেকে প্রায় ৫০ ভাগ সুরক্ষা দেয়। এগুলো সাধারণত ঠান্ডা পরিবেশ থেকে নাক-মুখকে সুরক্ষিত রেখে উষ্ণতা দেয়। আর এ মাস্কগুলো প্রধানত ফ্যাশনে ব্যবহৃত হয়, কোনো ভাইরাস বা ধুলাবালি তেমন প্রতিরোধ করতে পারে না।

সার্জিক্যাল মাস্ক: সার্জিকাল মাস্ক একবার ব্যবহারযোগ্য। একটু ঢিলেঢালা এই মাস্ক নাক ও মুখকে ঢেকে রাখে এবং ব্যক্তি যে পরিবেশে আছেন সেখান থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হয়। সাধারণত মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট হিসেবেই সার্জিকাল মাস্ক ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের মাস্ককে কখনো কখনো ফেস মাস্কও বলা হয়। তবে বাজারে যেসব ফেস মাস্ক পাওয়া যায়, তার সবই সার্জিক্যাল মাস্ক নয়। মানুষ যখন হাঁচি-কাশি দেয়, তখন নাক-মুখ থেকে যে অতি ক্ষুদ্র তরল ছিটকে আসে তাকে বলা হয় ‘ড্রপলেট’। সার্জিক্যাল মাস্ক বড় আকারের ড্রপলেট থেকে সুরক্ষা দিতে পারলেও বাতাসে ভাসমান অতিক্ষুদ্র কণা আটকাতে পারে না। তাছাড়া ঢিলেঢালা হয় বলে জীবাণুর হাত থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারে না এই মাস্ক।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh