ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:২০ পিএম
ছবি: ডয়চে ভেলে
অবশেষে শান্তি আলোচনায় বসতে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে আফগানিস্তান সরকার ও তালেবান গোষ্ঠী।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের দোহায় দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে আফগান সরকারের প্রতিনিধি ও তালেবান নেতাদের মধ্যে। এতদিন সেই আলোচনা মতবিরোধের কারণে এগোচ্ছিল না।
তবে গতকাল বুধবার (২ ডিসেম্বর) যৌথ বিবৃতি দিয়ে সরকার ও তালেবান জানিয়েছে, প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে। ভবিষ্যতে আলোচনা কীভাবে এগোবে, অস্ত্রবিরতি নিয়ে কীভাবে আলোচনা হবে, তারই রূপরেখা তৈরি হয়েছে এই প্রাথমিক চুক্তিতে।
গত ১৯ বছরের মধ্যে এই প্রথম আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে লিখিত চুক্তি হলো।
আলোচনায় আফগান সরকারের প্রতিনিধি নাদের নাদেরি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচনার পদ্ধতি ও প্রস্তাবনা চূড়ান্ত হলো। এবার নির্দিষ্ট কর্মসূচি অনুযায়ী আলোচনা চলবে। তালেবান প্রতিনিধিও টুইট করে এই বক্তব্য সমর্থন করেছেন।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করা হবে। তারা শান্তিচুক্তির এজেন্ডা কী হবে তার খসড়া তৈরি করবে। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সাদিক সিদ্দিকি টুইট করে জানিয়েছেন, প্রাথমিক চুক্তি হলো। এবার মূল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এর মধ্যে আফগান মানুষের প্রধান দাবি, অস্ত্রবিরতির প্রসঙ্গও আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দুইপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, এই চুক্তি হলো মতৈক্যে পৌঁছনোর জন্য দুইপক্ষের নিরন্তর চেষ্টা ও ইচ্ছের যোগফল। দুইপক্ষ যাতে সহিংসতা কমিয়ে অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছতে পারে, তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করবে।
জাতিসংঘের আফগান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খালিজাদ জানিয়েছেন, দুইপক্ষের মধ্যে তিন পাতার প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক রোডম্যাপ তৈরি ও সামগ্রিক অস্ত্রবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিধিনিয়ম ঠিক করা হয়েছে। সবাই মতৈক্যে পৌঁছেছেন।
আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনী ও তালেবানের মধ্যে লড়াই এখনো চলছে। মাঝে মধ্যেই আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে দোহায় গত কয়েক মাস ধরে দুই পক্ষের আলোচনা চলছিল। তালেবান প্রথমে অস্ত্রবিরতি নিয়ে কথা বলতেই রাজি ছিল না। তাদের বক্তব্য ছিল, আলোচনা অনেকটা এগোলে এ নিয়ে কথা বলা যেতে পারে।
গত মাসে একবার মতৈক্যের খুব কাছে পৌঁছেছিল দুইপক্ষ। কিন্তু চুক্তির প্রস্তাবনা নিয়ে শেষ সময়ে তালেবান বেঁকে বসে। ফলে তখন আর প্রাথমিক চুক্তির ঘোষণা করা যায়নি।
তালেবানের দাবি ছিল, চুক্তিতে আফগান সরকার কথাটা রাখা যাবে না। কারণ বর্তমান সরকারকে তারা জনগণের আসল প্রতিনিধি বা ন্যায়সঙ্গত সরকার বলে মানে না।
এই পুরো প্রক্রিয়ার বিষয়ে ওয়াকিবহাল এক পশ্চিমা কূটনীতিক রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দুইপক্ষই কিছু বিবাদের বিষয় পাশে সরিয়ে রেখে এই চুক্তি করেছে। কারণ দুইপক্ষই জানে পশ্চিমা দেশগুলোর আর ধৈর্য থাকছে না। এই দেশগুলো চাইছে, আলোচনা এগোক। -ডয়চে ভেলে