টিকা এখনই করোনা সমস্যার সমাধান দেবে না

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২০, ০৯:৩১ এএম

শিগগিরই মাস্ক না পরার কথা বা ফেলে দেয়ার কথা ভাববেন না। কারণ টিকা এখনই করোনাভাইরাস সমস্যার সমাধান দেবে না।

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কভিড-১৯ টিকা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি ২০২১ সালেরও কয়েক মাস পর্যন্ত লাগতে পারে।

চলতি সপ্তাহে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন ৭০ শতাংশ কার্যকর বলে জানিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিনটির যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলে ট্রায়ালের পর এই ফল পাওয়া গেছে।

ফাইজার গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনকে তাদের টিকা বিতরণ শুরু করতে জরুরি অনুমোদনের জন্য বলেছে এবং মডার্নাও যে কোনোদিন এর জন্য আবেদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে বেশিরভাগ লোককে ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করার জন্য কয়েক মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

ফাইজার ও মডার্নার টিকাগুলোর জন্য দুটি করে ডোজ প্রয়োজন, যার অর্থ হলো মানুষের পুরো সুরক্ষার জন্য যথাক্রমে তিন ও চার সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। মডার্নার তৈরি করোনা টিকা একজন ব্যক্তিকে কভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা দেবে। কিন্তু এটি নেয়ার পরও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মাধ্যমে ভাইরাসটি অন্যদের মধ্যে ছড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন মডার্নার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ড. টাল জ্যাকস।

অর্থাৎ এই টিকা নিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সুরক্ষিত থাকলেও তার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। টিকা গ্রহীতা ভাইরাসটি বহন করতে পারেন। এই টিকা ভাইরাসটির বাহক হওয়া থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিরত রাখতে কতটা কার্যকর, তা এখনো নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই।

টিকা সবমসয় সবার জন্য কার্যকর থাকে না। উদাহরণস্বরূপ- মৌসুমি ফ্লু টিকাগুলো প্রায় ২০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর হয়েছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার ও মডার্না জানিয়েছে, তাদের তৈরি টিকা কভিড-১৯ প্রতিরোধে ৯০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি কার্যকর। তবে গবেষণা শেষ হওয়ার সাথে সাথে এই হারগুলো পরিবর্তিত হতে পারে। সম্পূর্ণরূপে সংক্রমণ রোধ করার পরিবর্তে প্রথমে কভিড-১৯ টিকা কেবল অসুস্থতা প্রতিরোধ করতে পারে। টিকা নেয়া লোকেরা ভাইরাস সংক্রমণ করতে সক্ষম হতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্ক ব্যবহার কিছু সময়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। টিকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- এগুলো কাজ করতে কিছুটা সময় নিতে পারে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা বিশেষজ্ঞ দেবোরাহ ফুলার বলেন, একটি কভিড-১৯ টিকার প্রথম প্রয়োগ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এক ডিগ্রি সুরক্ষা আনতে পারে, যার অর্থ সংক্রমিত লোকেরা অন্যথায় যেমন অসুস্থ নাও হতে পারে। তবে দ্বিতীয় প্রয়োগের পরে বা পুরো প্রয়োগ হওয়ার প্রায় ছয় সপ্তাহ পরে সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিতে পারে।

উইসকনসিনের মার্শফিল্ড ক্লিনিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের টিকা গবেষক ড. এডওয়ার্ড বেলঙ্গিয়া বলেন, আগামী কয়েক বছরে ভাইরাস পরিবর্তিত হবে ও টিকার সুরক্ষা কতদিন স্থায়ী হয় তার ওপর নির্ভর করে পরে বুস্টার প্রয়োগ প্রয়োজন হতে পারে।

বেলঙ্গিয়াসহ বেশ কয়েকজন বলেছেন, করোনাভাইরাস কখনই একেবারে শেষ হয়ে যাবে না এবং মানুষকে অসুস্থ করে তোলে এমন অনেক মৌসুমি ভাইরাসগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠবে। 

তাহলে টিকাগুলো কীভাবে ভাইরাসটির হুমকিকে সেই পর্যায়ে কমাতে সাহায্য করবে? বেলঙ্গিয়া বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের কেবল অপেক্ষা করতে হবে ও দেখতে হবে। -ইউএনবি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh