কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২০, ১২:১৮ পিএম
গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে ঐতিহ্য ধরে রাখতে কুষ্টিয়ার মিরপুরে আয়োজন করা হয়েছে লাঠি খেলা। দিনব্যাপী লাঠি খেলার আয়োজনকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আমেজ। আয়োজকরা জানান, সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আগামী বছরও এমন আসর আয়োজন করতে চান তারা।
রবিবার (২২ নভেম্বর) সকালে মিরপুর উপজেলার বলিদাপাড়া বারুইপাড়া যৌথ প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়। মিরপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলায় এবার অংশ নেয় হাজরাহাটি ও কবরবাড়ীয়া দল।
ঐতিহ্যবাহী এই খেলা দেখতে আগ্রহের কমতি নেই গ্রামবাসীর। কেউ খেলা দেখতে হাজারো দর্শকের আগমন ঘটে। লাঠিয়ালদের অপূর্ব কৌশল দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। নিয়মিত এমন আয়োজন দেখতে চান তারা।
বারাতালা স্পোর্টিং ক্লাব আয়োজিত এ লাঠিখেলার উদ্বোধন করেন দিশার নির্বাহী পরিচালক রবিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, লাঠিখেলা গ্রামাঞ্চলের মানুষের নির্মল বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। লাঠিখেলায় শুধু লাঠি দিয়ে খেলাই হয় না, সঙ্গে প্রদর্শন করা হয় নানা রকম শারীরিক কসরত। যেসব বাঙালি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, গ্রামীণ খেলাধুলা কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে, তার মধ্যে অন্যতম একটি লাঠিখেলা। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে লাঠিখেলাকে টিকিয়ে রাখতে চাই। এজন্য যা যা করণীয় তাই করা হবে।
বারাতালা স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি তুফান আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিশ্বাসের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক তসলিম উদ্দিন খান, বারুইপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. শফিকুল ইসলাম মন্টু প্রমুখ।
বারাতালা স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি তুফান আলী বলেন, বাংলাদেশে ইতিহাস-সংস্কৃতির অংশ হিসেবে বাঙালির রক্তে মিশে ছিল ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, যা কালের বিবর্তনে এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। আমরা আমাদের এই স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে প্রতিবছর লাঠিখেলার আয়োজন করে থাকি। এই খেলা টিকিয়ে রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।
দর্শক হাসান আহমেদ বলেন, আমরা প্রতিবছর এমন আয়োজন দেখতে চাই। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই খেলা যেন টিকে থাকে।
আরেক দর্শক ইউসুফ আহমেদ জানান, লাঠিখেলার অনেক গল্প শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে দেখার সুযোগ হয়নি। আজকে এই লাঠিখেলা দেখলাম। সত্যিই এটি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খেলা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দর্শকদের আগ্রহ আর ভালবাসায় এখনো টিকে আছে ঐতিহ্যবাহী খেলাটি। তবে শত বছরের পুরোনো এই খেলা ধরে রাখতে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি উদ্যোগ নিতে হবে প্রশাসন ও আয়োজকদের।