কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১০:৩৪ এএম
কক্সবাজারের উখিয়ায় বালুখালী নামক পানবাজার-সংলগ্ন গ্রামে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। গ্রাম ছেড়েছেন শত শত মানুষ।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানা ও আদালতে গ্যাংলিডার ছৈয়দ নুরসহ অর্ধশত সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। তার পরও থেমে নেই তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা।
জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় নুর বাহিনীর সদস্যরা লুটরাজ দখল-বেদখল, ইয়াবা-বাণিজ্য, পাহাড় কাটা, মানবপাচার ও চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গা নাগরিক একাধিক মাদক মামলার আসামি মাহমুদুল হকও যোগ দিয়েছেন নুর বাহিনীতে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দিনরাত সশস্ত্র মহড়া দিয়ে যাচ্ছে এবং সন্ধ্যার পর ওই এলাকা ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়। এ সময় রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আলুসহ বিভিন্ন মালামাল চলে যায় ছৈয়দ নুর বাহিনীর গুদামে, যা পরে চড়া দামে বাজারে বিক্রি করা হয়।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ওই এলাকার ছৈয়দ মোস্তফার দুই ছেলে মাদক মামলায় জেল-ফেরত অর্থাৎ দুই সহোদর ফরিদ ও জাফর ওই গ্যাংয়ের সাথে যুক্ত হয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্যানেল চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নুরুল আবছার চৌধুরী জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজল কাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি হওয়া সত্ত্বেও আবারো প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছেন সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বালুখালী পানবাজার ও পার্শ্ববর্তী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবৈধ মাদক-বাণিজ্য থেকে শুরু করে ত্রাণের চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আলুসহ ইত্যাদি পণ্যের অবৈধ মজুত গড়ে তোলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারের গডফাদার ছৈয়দ নুর ছিলেন একসময় গাড়ির সহকারী। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ইয়াবা ও অবৈধ ব্যবসার বদৌলতে তিনি এখন কোটি কোটি টাকা ও গাড়ি বাড়ির মালিক। তার নেতৃত্বে ৫২ সদস্যের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। তারাই মূলত আধিপত্য বিস্তার থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। তার অনৈতিক বাণিজ্য দীর্ঘদিন সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও পুলিশি অভিযান না থাকায় তিনি এখন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি।
তার বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, মাদক মামলা, চাঁদাবাজিসহ দুই ডজনের অধিক মামলা রয়েছে উখিয়া, কক্সবাজার সদর মডেল থানা ও মহেশখালী থানায়।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেছেন, বালুখালীতে একাধিক ঘটনায় একাধিক অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।