বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২০, ১১:২৩ এএম
প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণে ধারাবাহিক অভিযানের ১৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত আটদিনে বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায় ২৯৭ জনকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে।
যার মধ্যে ২৪৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ৪৯ জনের কাছ থেকে ২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া ৭০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও অভিযানে ২৯৭টি মামলা ও প্রায় ১৬ লাখ মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এবং নৌ-পুলিশ, থানা পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ছয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এতে ৩৬টি মামলা, আট জেলেকে জরিমানা ও ২৮ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা ও জব্দ করা হয় এক লাখ ৬ হাজার মিটার জাল। পরে তা জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পোড়ানো হয়।
হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট বকুল চন্দ্র কবিরাজের নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযানে ২২ জেলেকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ৭০ হাজার মিটার জাল। আটক প্রত্যেককে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০ জেলেকে আটক করে বরিশাল জেলা প্রশাসন। অভিযানের নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ দস্তগীর। পরে তাদের মধ্যে পাঁচজনকে এক মাস করে বিনাশ্রম করাদণ্ড ও পাঁচজনকে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়। এ সময় জব্দকৃত ১১ হাজার মিটার জাল পোড়ানো ও ২৫ কেজি ইলিশ এতিম ও দুস্থদের দেয়া হয়।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমীনুল ইসলামের নেতৃত্বে গত শনিবার (২৪ অক্টোবর) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এ সময় বাবুগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় এক জেলেকে আটকের পর এক মাসের বিনাশ্রম করাদণ্ড দেন। তখন জব্দকৃত ২৪ হাজার মিটার জাল পোড়ানো হয় ও ১৮ কেজি ডিমওয়ালা ইলিশ এতিমদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
বানারীপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ ধরার অপরাধে তিন জেলেকে বানারীপাড়া থানা পুলিশের সহায়তায় আটক করা হয়। পরে আটক তিন জেলের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও তাদের কাছ থেকে এক হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করা হয়েছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ও ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে সারা দেশের নদ-নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ প্রজননক্ষেত্রে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময় দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, পরিবহন, বেচাকেনা, বিনিময় ও মজুত নিষিদ্ধ থাকবে।