ফরাসী পণ্য বর্জন না করতে ফ্রান্সের আহবান

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২০, ১০:৫৮ এএম | আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২০, ১০:৫৯ এএম

প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রোর মন্তব্যের জের ধরে ফরাসি পণ্য বর্জন না করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স। 

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল রবিবার (২৫ অক্টোবর) এক ‍বিবৃতিতে বলেছে, উগ্র সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে এই বয়কটের ‘ভিত্তিহীন’ ডাক দেয়া হয়েছে।

কুয়েত, জর্দান ও কাতারের কিছু কিছু দোকান থেকে ফরাসি পণ্য সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া লিবিয়া, সিরিয়া ও গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভও দেখা গিয়েছে।

শ্রেণীকক্ষে মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন দেখানোর পর এক শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় ম্যাঁক্রোর মন্তব্যের পর এই প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।

প্রেসিডেন্ট বলেছেন, স্যামুয়েল পাটি নামের ওই শিক্ষক খুন হয়েছিলেন কারণ ইসলামপন্থীরা আমাদের ভবিষ্যৎ চায়। কিন্তু ফ্রান্স আমাদের কার্টুন ছাড়বে না।

মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের জেরে এক মুসলিম উগ্রবাদী কর্তৃক একজন ইতিহাস শিক্ষককে হত্যার পর থেকেই উত্তপ্ত ফ্রান্স। ওই ঘটনার পর অন্তত ৫০টি মসজিদ ও মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকায় ভয়াবহ অভিযান চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। তার এ ঘোষণায় মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। মুসলিম দেশগুলোতে ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দেয়া হয়।


গতকাল জর্দান, কাতার ও কুয়েতের অনেক দোকানের তাক থেকে সরিয়ে নেয়া হয় ফরাসি পণ্য। ফ্রান্সে তৈরি হওয়া চুল ও সৌন্দর্য পণ্য ডিসপ্লে-তে রাখা হয়নি। কুয়েতে প্রধান একটি রিটেইল ইউনিয়ন ফরাসি পণ্য বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।

বেসরকারি ইউনিয়ন অব কনজ্যুমার কো-অপারেটিভ সোসাইটি বলেছে, মহানবী (সা.)-কে বার বার অসম্মান করার কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এছাড়া ফরাসি পণ্য বর্জনের দাবিতে টুইটার হ্যাশট্যাগ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সৌদি আরবসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও।

আরব বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ সৌদি আরবে ফরাসি সুপারমার্কেট চেইন শপ ‘ক্যাফৌউ’ বয়কট করা নিয়ে হ্যাশট্যাগ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ট্রেন্ডিং ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে।

এরপরই এক বিবৃতিতে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বয়কটের এই ডাক ভিত্তিহীন ও অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। সেই সাথে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে উগ্র সংখ্যালঘুদের পরিচালিত সব হামলাও বন্ধ করা উচিত।

এদিকে লিবিয়া, গাজা ও উত্তর সিরিয়ার তুরস্ক সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ফরাসি বিরোধী ছোট ছোট বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তুরস্ক ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতারা ম্যাক্রোঁর প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, তিনি বিশ্বাসের স্বাধীনতাকে কদর করছেন না ও ফ্রান্সের লাখ লাখ মুসলিমদের কোণঠাসা করছেন।

গতকাল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেন, ইসলামের প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্টের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে তার মানসিক চিকিৎসা করানো দরকার। ইসলাম ও মুসলিমদের নিয়ে ম্যাক্রোঁর মতো ব্যক্তিদের কী সমস্যা?

এর মধ্যে পাকিস্তানের নেতা ইমরান খান ফরাসি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তিনি কোনো কিছু না বুঝেই তিনি ইসলামকে আক্রমণ করছেন।

এক টুইটে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ইউরোপ ও পুরো বিশ্বে থাকা মুসলিমদের অনুভূতিকে আঘাত করেছেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ওই শিক্ষকের হত্যার আগেই ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সে ‘মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ রুখতে কঠোর আইন তৈরির পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। তিনি ইসলামকে ‘সংকটে’ থাকা ধর্ম উল্লেখ করে বলেন, ফ্রান্সের প্রায় ৬০ লাখ মুসলিম কাউন্টার সোসাইটি তৈরির চিন্তা করছে। -বিবিসি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh