বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২০, ০৪:৪৫ পিএম
রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের পক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল আবেদনের প্রস্তুতি নিয়েছে তাদের পরিবার।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৩০ সেপ্টেম্বর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর পরই মিন্নির আপিলের জন্য ওই আদালতেই আবেদন করেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম।
কারাগার থেকে ১ অক্টোবর জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ওকালতনামায় মিন্নির স্বাক্ষর নেয়া হয়। বাকি পাঁচ আসামিও ওকালতনামায় সই করেন। শনিবার বিকেলে সহিমোহর পেয়েছেন মিন্নির বাবা। সহিমোহর পেলে দ্রুত হাইকোর্টে যান মিন্নির বাবা মোজাম্মেল কিশোর।
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, আমরা ওকালতনামায় মিন্নির সই ও স্বাক্ষর নিয়েছি। আদালত থেকে সই মোহরকৃত মামলার কপি পেয়ে উচ্চ আদালতে যাচ্ছি। এজন্য আইনজীবীও নিয়োগ করা হয়েছে।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর অভিযোগ করে বলেন, রায়ের পরপরই আমরা জরুরি ভিত্তিতে আদালতের কাছে সহিমোহরকৃত মামলার কপি চেয়েছিলাম। আমরা পেয়েছি। কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃত কালক্ষেপণ করছেন। আমাদের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। আমি আশাবাদী হাইকোর্ট আমার মেয়েকে জামিন দিবে।
নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরিফ বলেন, বরগুনা বিজ্ঞ আদালত যে রায় ঘোষণা দিয়েছেন এতেই আমরা খুশি। তবে দ্রুত এই রায় কার্যকর করা হলে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে। আমি আদালতের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষ আইনজীবী ভুবন চন্দ্র হালদার বলেন, বিজ্ঞ আদালত তথ্য উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে এই রায় প্রদান করেছে। এমন একটি রায় বরগুনার মানুষকে উপহার দিয়েছে, যা দেখে কেউ প্রকাশ্যে এ রকম হত্যাকাণ্ড ঘটাতে না পারে।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের ভিড়ে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ঘটনার পরদিন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দু’ভাগে বিভক্ত করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এতে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। এ মামলায় মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে এ মামলার রায় পড়া শুরু করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।