বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ উদ্বোধন মোদির

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২০, ০৮:৩৫ পিএম

ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রামমন্দির নির্মাণের সূচনা করেছেন। যেখানে প্রায় ৫০০ বছর পুরনো বাবরি মসজিদ ছিলো ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বুধবার (৫ আগস্ট) ধর্মীয় অনুষ্ঠানের শেষে মোদি এক ভাষণ শুরুই করেন রামায়ণের একটি পংক্তি উদ্ধৃত করে। তিনি বলেন, ভগবান রামের কাজ না করলে আমার শান্তি কিসে হবে?

রামলালা (হিন্দুদের কাছে ভগবান রামের ছোট বয়সের রূপকে রামলালা বলা হয়) অনেকদিন ধরেই একটি অস্থায়ী তাঁবুতে থাকছেন। কয়েক শতাব্দী ধরে যা চলে আসছে- একবার ধ্বংস আরেকবার নির্মাণ- এই চক্র থেকে আজ রাম জন্মভূমি মুক্তি পেলো। এই উপলক্ষ্যে ১৩০ কোটি ভারতবাসীকে আমার প্রণাম। রামচন্দ্রকে ভারতীয় সংস্কৃতির আধার বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তার কথায়, ভগবান শ্রীরামের মন্দির আমাদের সংস্কৃতির আধুনিক প্রতীক, শাশ্বত আস্থার প্রতীক হয়ে উঠবে। এই মন্দির কোটি কোটি মানুষের মিলিত শক্তির প্রতীক হয়ে উঠবে।

ভাষণের আগে ভূমিপুজো করে তিনি প্রস্তাবিত মন্দিরটির গর্ভগৃহ যেখানে তৈরি হবে, সেখানে একটি রুপার ইট রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে বুধবারই নরেন্দ্র মোদি প্রথমবার অযোধ্যায় গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্দির পরিদর্শন করেন।

মোদি ছাড়া ভূমিপুজোর কাছাকাছি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভগবত এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ অতি বিশিষ্ট কয়েকজন হাজির ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন প্রায় তিনদশক ধরে চলতে থাকা রামমন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সাধু-সন্তরাও।

তবে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময়ে রামমন্দির আন্দোলনের নেতৃত্ব যারা দিয়েছিলেন, সেই লালকৃষ্ণ আদভানি বা মুরলী মনোহর যোশী অথবা উমা ভারতীরা এদিন অযোধ্যায় যাননি।

আমন্ত্রণ যায়নি রামমন্দির আন্দোলনের আরেক শরিক মহারাষ্ট্রের শিবসেনা দলকেও। তারা ভূমিপুজো চলাকালীনই জানান, কর সেবকদের আত্মত্যাগ যারা রামমন্দিরের ভূমিপুজোর দিনে ভুলে যায়, তাদের 'রামদ্রোহী' বলা উচিত।


করোনা মহামারির জন্য ভারতে এখন ধর্মীয় জমায়েত নিষিদ্ধ থাকলেও প্রস্তাবিত রামমন্দিরের ভূমিপুজো অনুষ্ঠানের আশপাশে হাজার হাজার ভক্ত হাজির হয়েছিলেন।

অযোধ্যায় উপস্থিত বিবিসির সংবাদদাতা সর্বপ্রিয়া সাঙ্গোয়ান জানান, তাদের বেশিরভাগই সামাজিক দূরত্ব বিধি বা মাস্ক পরার নিয়ম মানেননি।

রামমন্দির নির্মাণ উপলক্ষে সারা দেশেই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির নেতাকর্মীরা উৎসব করেছেন। অন্যদিকে ভারতের মুসলমানদের অনেকেই দিনটিকে কালাদিবস হিসাবে পালন করছেন নিজেদের সামাজিক মাধ্যমের প্রোফাইল কালো রঙ দিয়ে।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এক টুইট করে জানিয়েছে, বাবরি মসজিদ একটা মসজিদ ছিলো আর থাকবে। আয়া সোফিয়া আমাদের কাছে একটা বড় উদাহরণ। অনায্য, লজ্জাজনক এবং সংখ্যাগরিষ্ঠকে খুশি করার মতো একটি রায়ের সুযোগ নিয়ে জমির দখল নেয়া হলেও তার অবস্থান বদলাতে পারবে না কেউ। ভেঙ্গে পড়বেন না। অবস্থা চিরকাল একরকম থাকবে না।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh