সুনামগঞ্জে পানিবন্দি লক্ষাধিক পরিবার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২০, ০২:০৯ এএম | আপডেট: ২৮ জুন ২০২০, ০৯:৫২ এএম

সুনামগঞ্জে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বাড়ছে পানি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শহর-গ্রামের কয়েক লক্ষাধিক পরিবার। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি উপজেলা।

স্বাস্থ্য কেন্দ্র,শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করছে। ডুবে গেছে বিশুদ্ধ পানির নলকূপ। কয়েকটি এলাকায় বাড়িঘর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ভেঙে গেছে। ফলে ক্রমেই বেড়ে চলছে মানুষের দুর্ভোগ। তবে এখনো কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার খবর পাওয়া যায়নি। তবে কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

জানা যায়, জেলার সুনামগঞ্জ সদর উপজেলাসহ জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, জগন্নাথপুর, বিশ্বম্ভপুর, ছাতক, দোয়ারা বাজারসহ ১১টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রতিটি ইউনিয়নের গ্রামগুলো ও হাটবাজারগুলোতে কোথাও হাটু পানি আবার কোথাও কোমর সমান পানির কারণে চরম দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। 

এছাড়াও সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া, আরপিন নগর, বড়পাড়া,কাজির পয়েন্ট ষোলঘর, ওয়েজখালি, মল্লিকপুর,পশ্চিম হাজীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা হাটু সমান পানি। 


পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, সুরমার পানি ষোলঘর পয়েন্ট দুপুর ১২টার দিকে বিপদসীমার ৫৭সেন্টিমিটার এবং পাহাড়ি নদী যাদুকাটার পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে, কাঁচা সড়ক ডুবে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গ্রাম থেকে গ্রামে। গরু-বাছুর মালমালসহ আশ্রয় নিচ্ছে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি ও গ্রামের বিদ্যালয়গুলোতে। 

ধর্মপাশার শুকাইর রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে ৩০টি বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেন।

জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ দেব জানান, জামালগঞ্জের সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আছে বেহেলী ও ফেনারবাক ইউপি। বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রাস্তাঘাট। এ পর্যন্ত ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। 

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমিন নাহার রুমা জানান, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর, গৌরারং, সুরমা ও রঙ্গারচড় ইউপিতে। অন্যান্য ইউপিতে আংশিক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা সবগুলো সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো আশ্রয়কেন্দ্র করার জন্য নির্দেশ দেয়া আছে। 


তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ জানান, আমার উপজেলায় পাহড়ি ঢলে পানির বাড়ছে। আমি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে খোলা রাখার নিদর্শেনা দিয়েছি। নিম্নাওঞ্চলের প্রতিটি পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্র যাবার জন্য উৎসাহিত করছি। উপজেলায় চিসকা গ্রামের বন্যা কবলিত পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার বিতরণ করছি। এছাড়াও আমি সার্বক্ষণিক হাওরের পাড়েরসহ প্রতিটি গ্রামের খবর রাখছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।    

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য বলা হয়েছে। প্রয়োজন হলে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্র খোলার জন্য সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh