শিক্ষকদের টাইম স্কেল কতদূর?

শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২০, ০৬:৪৭ পিএম

বর্তমান সরকার দেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে। অন্যসব ক্ষেত্রের মতো শিক্ষাক্ষেত্রেও সরকার সফলতা অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২ মে দ্বিতীয় শ্রেণির বেতন স্কেলভুক্ত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা প্রদান করেছিলেন। যা ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর সেই আদেশ বাস্তবায়ন হয়নি। এর ৩৮ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ২০১২ সালের ১৫ মে সহকারী শিক্ষকরা দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা ফিরে পান।

সহকারী শিক্ষকদের যোগদান থেকে চাকরিকাল গণনা করে দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল মঞ্জুর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মোট তিনবার ডিপিসি সভা করলেও সমন্বয়হীনতার কারণে তা মঞ্জুর হয়নি। ফলে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত চাকরি করেও টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড পাননি অধিকাংশ শিক্ষক। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পাওয়ার জন্য উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করলে আদালত শিক্ষকদের পক্ষে রায় প্রদান করেন। রায়ের কপি হাতে পৌঁছানোর তিন মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু প্রায় এক বছর আগে রায়ের সার্টিফাইড কপি মাউশি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতার কারণে মূলত শিক্ষকদের বকেয়া টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড আটকে আছে।

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পদোন্নতিযোগ্য পদ সীমিত। তাই ৩০ বছর ধরে একই পদে চাকরি করে কোনো পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যেতে হয়। উক্ত পদ উন্নীতকরণেও সহকারী শিক্ষকরা শুধু মর্যাদা ছাড়া অন্য কোনো সুবিধাপ্রাপ্ত হননি। বরঞ্চ টিফিন ভাতা বাবদ প্রতিমাসে প্রদত্ত ১৫০ টাকা প্রত্যাহার এবং যৌথ বীমা বাবদ প্রতিমাসে ৪০ টাকা কর্তনসহ মোট ১৯০ টাকা করে কর্তন করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতার কারণে শিক্ষকরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা সরকার ঘোষিত শিক্ষকদের সম্মানিত করার প্রয়াসকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এসব সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।

অন্যান্য দপ্তরে সময়মতো টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড প্রদান করা হলেও সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের প্রাপ্য টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড বিভিন্ন অজুহাতে আটকে দেওয়া হয়েছে। ফলে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। শিক্ষকদের ন্যায্য পাওনা প্রদান করা হলে তাদের ক্ষোভ ও হতাশা প্রশমনের পাশাপাশি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশও নিশ্চিত হবে। এতে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকল্পে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ আরও গতিশীল হবে।

শাহাব উদ্দিন মাহমুদ সালমী
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, 
বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh