বাউফলে আ.লীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রলীগকর্মী নিহত

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২০, ০৯:৪৮ এএম | আপডেট: ২৫ মে ২০২০, ০২:৪৯ পিএম

পটুয়াখালীর বাউফলে করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্য সতর্ককিরণ বাণী সম্বলিত তোরণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এমপি ও মেয়য় সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত এবং উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন। নিহত ছাত্রলীগকর্মী তাপস দাস (২৫) উপজেলার কালাইয়া গ্রামের বিধু দাসের ছেলে।

সংঘর্ষে আহত হওয়ার পরে মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। নিহতের ভাই রাজীব দাস মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ভাই এবং আহতদের সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুর ১টার দিকে পৌর শহরের জেলা পরিষদের ডাক বাংলোর সামনে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েলের পক্ষে করোনাভাইরাসের সংক্রমনরোধে প্রচারের জন্য একটি তোরণ নির্মাণ করা হচ্ছিল।

এ সময় জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও বর্তমান সংসদ সদস্য আ.স.ম ফিরোজ অনুসারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক  সম্পাদক ও নাজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী এসে তাদের বাঁধা দেয়।

খবর পেয়ে মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ঘটনাস্থলে আসলে ইব্রাহিম ফারুকের সাথে তার বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এসময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়।

পরবর্তীতে এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাউফলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এর মধ্যস্থতায় মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ও ইব্রাহিম ফারুককে নিয়ে ওসির কক্ষে সমজোতায় বসেন।

ঠিক সেই মুহূর্তে উপ‌জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির মোল্লার নেতৃত্বে ২০-৩০ জন লোক মোটরসাইকেল যোগে এসে ডাকবাংলোর সামনে তোরণ ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় মেয়র গ্রুপের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে তাদেরকে ধাওয়া করলে এমপি গ্রুপ ডাকবাংলোর মধ্যে অবস্থান নেয়। এ সময় এমপি গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী তাপস (২৫), পঙ্কজ (৩৫) আহত হয়।

এ ঘটনার আগে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় এম‌পি গ্রু‌পের নাজিরপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন ও ছাত্রলীগ কর্মী  শামীম এবং মেয়র গ্রুপের যুবলীগ কর্মী ইব্রাহিম (৩৫), বাউফল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইউসুফ (২৫) আহত হন। পুলিশ লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

আহতদের মধ্যে ছাত্রলীগ কর্মী তাপসকে (২৫) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পঙ্কজকে (৩৫) বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, শহরের পরিবেশ অশান্ত করতেই ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সংবলিত করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে তোরণ নির্মাণকালে বাঁধা দেয় এবং তোরণের কাঠামো ভাংচুর করে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাজিরপুরের ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক বলেন, আমার কোন বক্তব্য নেই। কি ঘটে‌ছে তা সবাই দে‌খেছে।

বাউফল সার্কেলের সহকারী পু‌লিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, পরিবেশ শান্ত রাখার জন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো ভাবেই বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে দেওয়া যাবে না। বিষয়টি নিয়ে দুই গ্রুপের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করা হবে। তাছাড়া নিহতের ঘটনা অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh