চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় মিলছে না পর্যাপ্ত ইলিশ

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২০, ১১:১০ এএম

ছবি: চাঁদপুর প্রতিনিধি

ছবি: চাঁদপুর প্রতিনিধি

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাটকা সংরক্ষণে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ৩০ এপ্রিল। 

ওই দিন রাত ১২টার পর থেকে বৈধভাবে নদীতে মাছ শিকারে নামে চাঁদপুরের জেলেরা। কথা ছিলো দীর্ঘ ২ মাস পর তাদের এই নদীতে মাছ শিকারে নামা হবে উৎসবের। কিন্তু সব আশার মুখে যেনো আষাঢ়ের কালো মেঘের ছায়া। নিষেধাজ্ঞার দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে না জেলেদের জালে।

নৌকা ভরা ইলিশ নয়, বুকভরা হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরছে পদ্মা-মেঘনার জেলেরা। যার ফলে নদী কেন্দ্রীক মাছের আড়তসহ চাঁদপুর মাছঘাটও রয়েছে ইলিশশূন্য।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস থেকে জানা যায়, জেলার সদর, হাইমচর ও মতলব উপজেলায় প্রায় ৫১ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। তবে বেসরকারি হিসাবে এ তালিকা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি মৎস্যজীবী নেতাদের।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা রক্ষা ও ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি পর্যন্ত পদ্মা- মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটারে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এ সময় জেলেরা নদীতে মাছ শিকার থেকে বিরত থাকে।

হাইমচর নীলকমল ইউনিয়নের জেলে খোরশেদ গাজী জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে যাননি তিনি। ধার-দেনা করে কোনোরকম সংসার চালিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় এই করোনা ঝুঁকিতেও পেটের দায়ে নদীতে মাছ শিকারে নেমেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ইলিশ পাননি তিনি।

চাঁদপুর সদরের হানারচর ইউনিয়নের জেলে মফিজ গাজী, আবুল হোসেন, সালামত হোসেনসহ বেশ ক'জন জেলে জানান, প্রতিদিন নদীতে নামতে ইঞ্জিনে তেল খরচ, ভাগিদারসহ যা খরচ হয় তার চার ভাগের একভাগ টাকার মাছও জলে ধরা পরছে না। প্রতিদিন ৭/৮শ' টাকার মাছ ধরতে পারছি অথচ আমাদের খরচ হচ্ছে ২/৩ হাজার টাকা।

বহরিয়া এলাকার জেলে কাশেম বেপারী, নুর নবী, হাসেম জানান, নিষেধাজ্ঞার দুই মাসে চাঁদপুরের বাইরে থেকে অসাধু জেলেরা এসে জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ করে নিয়ে গেছে। এখন নদীতে মাছের সংখ্যা খুবই কম। মাছ না পাওয়ায় আমাদের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট করতে হচ্ছে। নিষিদ্ধ সময়ে অসাধু জেলেদের জাটকা নিধনের সুযোগ না দিলে সরকারের নিষেধাজ্ঞা সার্থক হবে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি জানান, নিরাপদ নদী এলাকায় ইলিশের বিচরণ থাকে। নিষেধাজ্ঞার সময় যেভাবে জেলেরা একত্রে জাল ফেলে জাটকা নিধন করেছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। জেলেরা যদি ছোট ইলিশকে বড় হওয়ার সুযোগ দেয়, তাহলে এই সুফল তারা ও দেশবাসী পাবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh