নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২০, ১০:৪৭ এএম
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) করোনা ইউনিট চালু হওয়ার পর ১০ দিনে ১০৩ জন রোগী মারা গেছেন। এ পর্যন্ত চালু হওয়া কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে এতো মৃত্যুর রেকর্ড নেই।
এই ইউনিটে এতো রোগী মারা যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণের তথ্য দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রাজধানীর অন্যান্য হাসপাতালে সেবা বঞ্চিত হওয়া রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে এখানে ভর্তি করা হচ্ছে বলে মৃত্যুর হার বেশি বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করছে।
২রা মে থেকে করোনা ইউনিটে পুরোদমে করোনা চিকিৎসা চালু করা হয়। এরপর থেকে পরবর্তী ১০ দিনে করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন ৬১০ জন রোগী। এদের মধ্যে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ১০৩ জন রোগী মারা গেছেন।
যাদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ছিলো ১৭ জন। বাকি রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এর বাইরে সাধারণ রোগে আরো কিছু রোগী মারা গেছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা ইউনিটে কভিড-১৯ পজিটিভ রোগী ছাড়া উপসর্গ আছে এমন রোগী, নিউরো সার্জারি, অর্থোপেডিক্স, শিশু বিভাগের রোগীরাও চিকিৎসা পাচ্ছেন। এমনকি করোনা আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই অনেক সাধারণ রোগী আছে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে শেষ মুহূর্তে ঢামেকে আসেন। যখন আসে তখন চিকিৎসকদের আর কিছু করার থাকে না।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমন দাবি করলেও করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী, রোগীর স্বজন, মৃত রোগীর স্বজনরা ভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এখানে আসা গুরুত্বর অসুস্থ অনেক রোগী সময়মতো সেবা পান না বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, ঢাকা মেডিকেল একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। এখানকার চিকিৎসকরা যেমন দক্ষ ঠিক তেমনি সকল রোগের চিকিৎসা করা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে আমরা করোনা রোগীদের পাশাপাশি করোনা সাসপেকটেড রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছি। তাই ঢাকার অনেক হাসপাতাল থেকে করোনা পজিটিভ রোগীদের পাশাপাশি সাসপেকটেড রোগীদের এখানে পাঠানো হয়।
কুয়েত মৈত্রি, কুর্মিটোলা, মুগদাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পজিটিভ রোগী ছাড়া ভর্তি নেয়া হয় না। আমরা সেই রোগী ভর্তি নিচ্ছি। বিশেষকরে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে হার্ট, লিভার, কিডনি, এজমার রোগীরা সেবা পাচ্ছে না বা ভর্তি হতে পারছে না। তাই তারা অনেক হাসপাতাল ঘুরে শেষ মুহূর্তে এখানে আসছে। কিন্তু এখানে আসার পরপরই তারা মারা যাচ্ছে। চিকিৎসকদেরও কিছু করার থাকছে না। এজন্য মৃত্যুর সংখ্যাটা বেড়ে যাচ্ছে।