বাজারে করোনাভাইরাসের প্রভাব
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২০, ০৫:৫৮ পিএম
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে আমাদের দেশে যে সংকট উপস্থিত হয়েছে, তা মোকাবেলায় ২৬ মার্চ থেকে ১০ দিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৫ মার্চ থেকে দোকানপাট বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে, তাতে নাগরিক মাত্রই উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা। দেশে এরই মধ্যে কমিউনিটি পর্যায়ে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে ভাইরাস পরীক্ষার সুযোগ ও পরিসর দ্রুত বাড়িয়ে দিতে হবে। নইলে যাদের শনাক্ত করা যাবে না তাদের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানোর ভয় ও ঝুঁকি থেকেই যাবে। ভয়াবহতা ঠেকাতে শনাক্তকরণ, পরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিতে হবে।
নিরাপত্তা সরঞ্জামের অভাবে এখনো দেশের বিভিন্ন স্থানের হাসপাতালে সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসকের কাছে ভিড়তে দেয়া হচ্ছে না। তাই সব হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য পর্যাপ্ত পিপিইর (পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট) ব্যবস্থা করাসহ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা দরকার। কারণ চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার ওপর গোটা চিকিৎসাব্যবস্থার কার্যকারিতা অনেকাংশেই নির্ভর করছে।
এরই মধ্যে এইসব সমস্যার অনুষঙ্গ হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লোকজন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে কেনা ও মজুদ করায় অনেক স্থানে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের সংকটও সৃষ্টি হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফার লোভে মজুদদারির কোনো সুযোগ না পায়, সরকারের দায়িত্ব অত্যন্ত কঠোর হাতে এ পরিস্থিতি সামলানো। জনসাধারণেরও উচিত হবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভোগ্যপণ্য কেনা থেকে বিরত থাকা। মনে রাখা দরকার সামর্থ্যবানরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য কিনলে বাজারে যে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হবে, তাতে বিপাকে পড়বেন স্বল্প আয়ের মানুষ। এ মুহূর্তে তারা প্রায় সবাই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, এ অবস্থায় এইসব মানুষের কীভাবে স্বার্থরক্ষা হয় সে ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থার বিকল্প নেই। একই সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের রেশন ব্যবস্থা চালু করা যায়। সরকার, বেসরকারি সংস্থাগুলো ও বিত্তবান মানুষরা তাদের পাশে এসে দাঁড়াতে পারে। সম্মিলিতভাবে সবাইকে এই ভয়াবহ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য এগিয়ে আসতে হবে ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করে।