যে কারণে মানুষ মুখে হাত দেয়

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২০, ১২:৫০ পিএম

করোনা মহামারী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এখন ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের অনেক দেশ বিপর্যস্ত। আইইডিসিআর-এর হিসাবমতে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৪৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৫ জন। 

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে চিকিৎসক ও গবেষকরা বলছেন অপরিষ্কার হাতে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ না করতে। বার বার হাত ধুতে এবং মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। কিন্তু এতেও যেন সতর্ক হচ্ছে না অনেকে। 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা শুধু বাংলাদেশের বা কোনো নির্দিষ্ট দেশের মানুষের স্বভাব তা না। মানুষের মৌলিক যে কটি আচরণ আছে, তার মধ্যে কিছুক্ষণ পরপর মুখে হাত দেয়া অন্যতম। কারণ, মানুষ ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় কিছুক্ষণ পরপর মুখে চোখে হাত দেয়। অতি প্রাচীনকাল থেকে মানুষ ও অন্য বড় প্রাণীরাও পোকামাকড় থেকে রক্ষা পেতে মুখে হাত দেয়া শুরু করে। এমনকি বিষণ্ন হলে, রাগ করলে, বিস্ময় প্রকাশ করার সময় মানুষ মুখে হাত দেয়।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মেরি লাউস ম্যাকলিউস ২০১২ সালে মানুষের মুখে হাত দেওয়া নিয়ে একটি গবেষণা করে। তাতে দেখা যায় মানুষ গড়ে ২৩ বার মুখে হাত দেয়। আরেক দল গবেষক যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন শহরের একটি সাবওয়েতে সাধারণ মানুষের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে। তাদের অজান্তে করা ওই পর্যবেক্ষণে দেখা গেল, একেকজন মানুষ গড়ে তিনবারের বেশি মুখে হাত দিচ্ছে।

কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার এই সময়ে তো এসব পরামর্শ মানতে হবে। তাই গবেষক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা চোখেমুখে হাত দেয়া বন্ধে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। শুধু করোনাভাইরাসই নয়, অন্যান্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াও মুখে হাত দেওয়ার মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে এই জরুরি পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার জন্য ও নিজের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য মুখে-নাকে ও চোখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে প্রথম পরামর্শ হিসেবে বসে বা শুয়ে থাকার সময় দুই হাতের আঙুল মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা। মুষ্টিবদ্ধ থাকা অবস্থাতেই কথা বলা বা হাঁটা-চলার চেষ্টা করা। এ ধরনের অবস্থায় অনেক সময় হাতের মুষ্টি ছুটে যেতে পারে। ফলে কিছুক্ষণ পরপর দুই হাত নাড়ানো। দুই হাত ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ পর আবারও মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা।

দ্বিতীয় পরামর্শ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা চোখে চশমা দেয়ার কথা বলছেন। এতে চোখে আঙুল চলে গেলেও বাধা আসবে। সারা দিন চোখে চশমা পড়ার অভ্যাস করলে চোখে হাত দেয়ার অভ্যাস ধারাবাহিকভাবে কমে আসবে। 

তৃতীয় পরামর্শ হিসেবে মুখে মাস্ক ব্যবহার করার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে হাতে থেকে ভাইরাস মুখের মধ্যে প্রবেশ করবে না।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh