জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:৪২ পিএম
সাভারের আশুলিয়া থেকে জামালপুরের বাড়িতে যাওয়ার সময় চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী পোশাক শ্রমিক (২৬)। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘীর রাস্তা থেকে শুক্রবার সকালে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। বর্তমানে তিনি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগী নারী জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গার্মেন্টস ছুটি হলে আশুলিয়া থেকে বাসে গাজীপুরের চানধরা এলাকায় নামেন। সেখান থেকে জামালপুরে আসার জন্য তিনি একটি পিকআপ গাড়িতে উঠেন। ওই সময় পিকআপে আগে থেকেই বসে থাকা মাঝবয়সী অজ্ঞাত এক লোক ‘কোথায় যাবে’ জানতে চায়। তিনি নিজেকে সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সৈনিক পরিচয় দিয়ে দিয়ে বলেন, তিনি ও পিকআপের চালক জামালপুর যাবেন। পিকআপটি চানধরা থেকে ছাড়ার পর কিছুদূর গিয়ে অন্যযাত্রীরা নেমে গেলেও তার পাশে থাকা যাত্রীটি একটি ফলের জুসের প্যাকেট কিনে ফের পিকআপে উঠেন। জুসের প্যাকেটটি ওই নারীকে খেতে দেন। জুস খাওয়ার পরই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। তাই কে তাকে ধর্ষণ করে সাগরদিঘীতে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে গেছে তা বলতে পারেননি তিনি।
পরদিন শুক্রবার ভোরে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী এলাকায় রাস্তার পাশে ওই নারীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। তার গলায় গার্মেন্টেসের পরিচয়পত্রে থাকা মোবাইল নম্বরে ফোন করে গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের জানানো হয়। একই সাথে স্থানীয়রা ওই নারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জামালপুরের শাহবাজপুরের মির্জাপুর থেকে ওই নারীর পরিবারের লোকজন সাগরদিঘী থেকে তাকে মুমুর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। শনিবার বিকেলে তাকে জামালপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নির্যাতনের শিকার ওই নারীর মা জানান, তাকে একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছে। দেখে মনে হচ্ছিল মেয়েটি আধমরা হয়ে গেছে। তার গোপনাঙ্গে ক্ষত ও তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে। নির্যাতনকারীরা তার ব্যাগে থাকা একজোড়া রূপার নূপুর, একসেট জামা, পাঁচ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যাগটি তার পাশে ফেলে রেখে যায়।
জামালপুর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান ফকির বলেন, ‘ওই নারীর নেশার ঘোর এখনো কাটেনি। তাকে সুস্থ করতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তার জ্ঞান ফিরলেও উঠে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। স্মরণশক্তি একেবারেই লোপ পেয়েছে।
জামালপুর সদর থানার ওসি মো. সালেমুজ্জামান বলেন, ‘একজন এসআইকে হাসপাতালে পাঠিয়ে ওই নারীর পরিচয় ও ঘটনার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছি। ঘটনাস্থল ঘাটাইলের সাগরদিঘী হওয়ায় ঘাটাইল থানাতেই মামলাটি দায়ের করার জন্য তার স্বজনদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’