ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০১৯, ১১:১৭ পিএম | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯, ০১:০৮ পিএম
শেষদিকের এলোমেলো ব্যাটিংয়ে ভারতের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া হলো না টাইগারদের। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮১ রান করেন মোহাম্মদ নাঈম। ভারতের পক্ষে মাত্র ৭ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন দীপক চাহার।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম থেকেই চালিয়ে খেলতে শুরু করেন লিটন দাস। খলিল আহমেদের প্রথম ওভারে দুই বাউন্ডারিতে ৮ রান নেন লিটন। কিন্তু ওয়াশিংটন সুন্দরের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দ্বিতীয় ওভার থেকে মাত্র ৩ রান আসে।
তৃতীয় ওভারেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। টানা দুই বলে লিটন ও সৌম্যের উইকেট তুলে বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দেন দীপক চাহার। সাজঘরে ফেরার আগে লিটন ৮ বলে ৯ রান এবং সৌম্য করেন শূন্য রান।
এরপর উইকেটে আসেন মোসাদ্দেকের পরিবর্তে দলে জায়গা পাওয়া মোহাম্মদ মিঠুন। এরপর খলিল ও ওয়াশিন্টন সুন্দরের কিপ্টে বোলিংয়ে মাত্র ৬ রান আসে। ৫ ওভার শেষে বাংলাদেশে সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১৮।
ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে আসা চাহালকে প্রথম তিন বলে তিন বাউন্ডারিতে স্বাগত জানান মোহাম্মদ নাঈম। ওই ওভার থেকে আসে ১৫ রান। পাওয়ার প্লে শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৩ রান করে টাইগাররা।
এরপর বোলিংয়ে আসা শিভাম দুবের ওভার থেকে ২ বাউন্ডারিতে ১২ রান নেয় টাইগাররা।
পরবর্তীতে চাহাল ও সুন্দরের ২ ওভার থেকে ১৭ রান আসে। এরই মধ্যে ৫০ রানের পার্টনারশিপ পূর্ণ করেন নাঈম ও মিঠুন।
দশম ওভারে ১২ রান নিলে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৭৪। ১১ তম ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মেরে অর্ধশতক পূর্ণ করেন মোহাম্মদ নাঈম। ওয়াশিংটন সুন্দরের ওই ওভারে ১৭ রান আসে। ১১তম ওভার শেষে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে ৯১ রান করে।
এরপর বোলিংয়ে আসা চাহালের ওপর চড়াও হন নাঈম। ফলে ১২তম ওভার থেকে আসে ১৫ রান। জয়ের জন্য শেষ ৮ ওভারে ৬৯ রানের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এরপরই ধাক্কা খায় টাইগার শিবির।
দ্রুততম সময়ে দুই উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। ১৩তম ওভারের শেষ বলে মিঠুনকে ফেরান দীপক চাহার। এরপর শিভম দুবের প্রথম বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন মুশফিকুর রহিম। ১৪তম ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান করে টাইগাররা।
১৫তম ওভারে ৯ রান করায় জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ৫০ রান প্রয়োজন টাইগারদের।
যখন জয়ের সুভাস পাচ্ছিলো টাইগাররা ঠিক তখনই জোড়া আঘাত হানে সিভাম দুবে। টানা দুই বলে মোহাম্মদ নাঈম ও আফিফ হোসাইনকে ফেরালে বাংলাদেশের জয়ের আশা ক্ষীণ হয়ে যায়। সাজঘরে ফেরার আগে ৪৮ বলে ৮১ রান করেন মোহাম্মদ নাঈম।
পরের ওভারে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে বাংলাদেশের পরাজয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৭৪ রান করে স্বাগতিক ভারত। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন শ্রেয়াস আইয়ার। বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন শফিউল ও সৌম্য সরকার।
ম্যাচের শুরুতেই দারুণ বোলিং করে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে ফেরান পেসার শফিউল ইসলাম। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ৬ বলে মাত্র ২ রান করেন রোহিত।
এরপর উইকেটে আসা লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন ধাওয়ান। আল আমিন-শফিউল-মুস্তাফিজদের ওপর চড়াও হতে থাকেন ধাওয়ান ও রাহুল। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে শফিউলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচে পরিণত হন ধাওয়ান। ফেরার আগে ১৬ বলে ১৯ রান করেন ধাওয়ান। প্রথম পাওয়ার প্লে শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪১।
এরপর রাহুলকে সঙ্গ দিতে উইকেটে আসেন শ্রেয়াস আইয়ার। প্রথমদিকে কোনো ঝুঁকি না নিয়ে স্কোর বাড়াতে থাকেন রাহুল-আইয়ার। দশম ওভার থেকে চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন তারা। মুস্তাফিজের ওই ওভারে ১২ রান নেন তারা। ১০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৭১।
১১তম ওভারে বোলিং করতে আসা লেগ স্পিনার আমিনুলের ১৬ রান নেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। সৌম্য সরকারের করা ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে ২ রান নিয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করেন লোকেশ রাহুল। তবে ১৩তম ওভারের প্রথম বলেই আল আমিনের শিকারে পরিণত হন রাহুল। ফেরার আগে ৩৫ বলে ৫২ রান করেন তিনি।
এরপর শ্রেয়াসকে সঙ্গ দিতে আসেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান রিসাভ পান্ত। ১৪তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন সৌম্য। ওই ওভারে ১২ রান নেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।
এরপর বোলিং করতে আসা আফিফ হোসাইনকে প্রথম তিন বলে তিন ৬ মেরে স্বাগত জানান শূন্য রানে জীবন পাওয়া শ্রেয়াস। ওই ওভার থেকে ২০ রান সংগ্রহ করে ভারত। ১৫ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১২৯।
এরপর ১৭তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন সৌম্য সরকার। প্রথম উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান রিসাভ পান্তকে বোল্ড করেন সৌম্য। এরপর বিপজ্জনক শ্রেয়াসকে লিটনের ক্যাচে পরিণত করেন সৌম্য। ফেরার আগে ৩৩ বলে ৬২ রান করেন শূন্য রানে জীবন পাওয়া শ্রেয়াস।
শফিউলের করা ১৮তম ওভারে ১৩ রান নেয় ভারত। ১৯তম ওভারে আল আমিনের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাত্র ৬ রান করতে পারে ভারত।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান করে ভারত।
এর আগে রবিবার (১০ নভেম্বর) নাগপুরে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
বাংলাদেশ একাদশ
লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ নাঈম, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসাইন, মোহাম্মদ মিঠুন, আমিনুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান।
ভারত একাদশ
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ার, রিসাভ পান্ত, শিভাম দুবে, মনিশ পান্ডে, ওয়াশিংটন সুন্দর, দীপক চাহার, খলিল আহমেদ ও যুজবেন্দ্র চাহাল।